3 A g বঙ্গবিজেতা । সরল উত্তর করিল, “কৈ না, আমি ত আর সে চিন্তা করিতেছি না।” সরলা সত্য কখাই বলিল,—তাহার হৃদয়ে প্রাতঃকালের দুঃখের চিত্ত৷ ছিল ন, অথচ বিমলার বোধ হইল, সরলার হৃদয় চিন্তাশূন্য ছিল না । স্নেহসহকারে তাহাকে একখানি ক্ষুদ্র নৌকায় উঠাইলেন, আপনি তাহার দড় ধরিয়| সেই বিস্তীর্ণ সরোবরে তরী চালন করিতে লাগিলেন । স্থৰ্য্য অস্ত যাইবার অনেক পূর্বেই সেই ঘনচ্ছায়ান্বিত আমবেষ্টিত সরোবরে অন্ধকার হইতে লাগিল । বিমলার বোধ হইল, যেন তাহার প্রিয়সর্থীর সরলাস্ত;করণেও কোন দুঃখ-তিমির ঘনীভূত হইতেছে । সরলা আন্তরিক ভাব গোপন করিতে জানিত না, কখন চেষ্টাও করে নাই ; বিমল অনায়াসেই বুঝিতে পারিলেন যে, সরলার হৃদয়ে কোন খেদচিত্ত। ঘনীভূত হইতেছে । তিনি যে সকল কথা বলিতেছিলেন সরলার ভাহাতে মন নাই,— এক মুহূৰ্ত্ত মনোনিবেশপূৰ্ব্বক শুনিতেছে, আবার পরমুহূৰ্ত্তে চারিদিকে চাহিতেছে, আর কি চিত্ত। বরিতেছে । বিমল পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন,-- “ সরল, আমার নিকট কেন লুকাইলে,—তুমি ত্যাবার সেই দুঃখচিন্ত৷ করিতেছ। তুমি চারিদিকে অবলোকন করিতেছ, অদ্য সমস্ত দিনই অন্তমনস্কা হইয়। রহিয়াছ । ছি, সে দুঃখচিত্ত ত্যাগ কর, তাইস, তামার নিকটে আইস ” এই বলিয়। বিমল অতি স্নেহ সহকারে সরলাকে আপন পার্শ্বে বসাইরা আপন হস্তে তাহার হস্ত ধারণ করিলেন । সরল উত্তর করিল, “ তোমার কাছে লুকাইব কিজন্য,--সত্য, আমার মন কেমন কেমন করিতেছে, কিন্তু যখাৰ্থ বলিতেছি, আমি সে দুঃখচিন্তা করিতেছি ন৷ ” বিমলা জিজ্ঞাসা করিলেন, “ তবে কি চিন্ত করিতেছ ?” সরল উত্তর করিল, “ জানি, জানি না,-চিন্ত কিছুই নাই,--এক একবার মন কেমন কেমন করিতেছে ।" সরল সম্পূর্ণ সত্যকথাই কহিয়াছিল। মন কিজন চঞ্চল হইতেছিল, তাহা বুঝিতে পারে নাই,—পাঠক মহাশয় যদি পারেন, অনুভব করুন । সন্ধ্য। ইইল, বিমলা ও সরল উদ্যান হইতে পুনরায় দুর্গাভ্যন্তরে আসিলেন । তখায় আসিয়া বিমলা সরলাকে কক্ষ হইতে কক্ষত্তরে লইয়া যাইতে লাগিলেন ও নানারূপ অপরূপ ও বহুমূল্য সামগ্ৰী দেখাইতে লাগিলেন । আপনার শয়নাগারে লইয়া যাইলেন, তখtয় একটা টিয়াপাখি ছিল, সে কথা কহিতে পারিত।
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১৩৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।