$ 8ෙ বঙ্গবিজেতা । এ রত্ব পাওয়া যায় ? আমি দরিদ্র হইব, কুটীরে বাস করিব, আমি দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করিব, তামাকে এ রত্নটী দাও । চিরকাল তপস্ত করিলে কি এ রত্ন পাওয়া যায়, সাগরে বাপ দিয়া প্রাণবিসর্জন করিলে কি এ রত্ন পাওয়া যায় ? আমি ভস্ম মথিয়া তপস্বিনী হইব, আমি সাগরে বাপ দিব,—আমাকে এ রত্নটী দাও ।—ন সরল, তোমার এ রত্ব আমি লইব না, পরের দ্রব্যে লোভ করিব না, পরমেশ্বর সহায় হউন, আমা হইতে সরলার যেন আর কষ্ট না হয়, আমি যেন পাপীয়সী না হই । ন৷ সরল, আমি তোমার ইন্দ্রনাথকে লইব না, আমি তাপন প্রেম বিসর্জন করিলাম,--প্রেম উৎপাটন করিতে যদি হৃদয় উৎপাটন করিতে হয়, তাহাতেও স্বীকার অাছি,—দেখিবে নারীর হৃদয়ে কত সহ হয় । আমি দিব্য করিতেছি, তোমার প্রণরে সপত্নী হুইব না, সরলা ! পরমেশ্বর তোমাকে সুখে রাখুন।” পরমেশ্বরের পবিত্র নাম স্মরণ করিলে কোন অভাগিনীর দুঃখ শান্তি না হয় । বিমলা পরমেশ্বরের নাম লইয়। হৃদয় সুস্থ করিলেন ; প্রতিজ্ঞ করিলেন, হৃদয়ে বাহাই থাকুক, বাহে ইন্দ্রনাথের প্রেমাকাঙ্ক্ষিণী হইবেন না । প্রতিজ্ঞ করিলেন বটে, হৃদয় কথঞ্চিৎ শান্ত করিলেন বটে, কিন্তু একেবারে শোক নিবারণ করা তাহার সাধ্য ছিল না । যে নারী কখনও মুহূৰ্ত্তমধ্যে হদয়ের সর্বস্ব বিসর্জন করিবার চেষ্টা করিরাছেন, বক্ষঃস্থল হইতে হৃৎপিণ্ড বাহির করিয়া নিক্ষেপ করিবার চেষ্টা করিয়াছেন, তিনি বিমলার যাতনা বুঝিয়াছেন। রজনী অধিক হইল, বিমলার চিন্তার শেষ হইল না। এক একবার সরলার চিন্তাশূন্য মুখথানি ও মুদিত নয়ন দুইটা দৃষ্টি করেন, এক একবার চিন্তায় অভিভূত হয়েন, আর এক একবার চক্ষু দিয়া নীরবে জলধারা পড়িতে থাকে। অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত তিনি চিন্তা করিতে লাগিলেন,—চক্ষুতে অশ্র ধীরে ধীরে ক্রমে ক্রমে সঞ্চিত হইতে থাকে, ক্রমে ক্রমে চক্ষু পরিপূর্ণ হয়, শেষে ধীরে ধীরে সেই জল বদনমণ্ডল দিয়া বহিয়া শয্যায় পতিত হয়। আবার অশ্ৰ সঞ্চিত হয়, আবার চক্ষু পরিপূর্ব হয়, আবার ধারা বহিতে থাকে । সেই গভীর রজনীতে সেই নীরব অশ্রুবিন্দু যে একের পর অন্তর্ট নিপতিত হইতেছিল, তাহা কে লক্ষ্য করিতেছিল ? এই জগৎসংসারে রজনীযোগে যে কত নীয়ব অশ্রদ্ধার প্রবাহিত হয়, তাহা কে লক্ষ্য করে ? ক্রমে রজনী প্রভাতপ্রার হইল, আকাশ পরিষ্কার হইয়া আসিল ; ঘরের ভিতর আলোক প্রবেশ করিড়ে লাগিল। রজনীযোগে অশ্রুবর্ষণে
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১৪৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।