পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*铭文 বঙ্গবিজেতা । যে, তাহার হৃদয়ে প্রতিজা যেরূপ দৃঢ় ও অভক্ষুর ছিল, পুরুষের হৃদয়েও সেরূপ প্রায় দেখা যায় না । পরের জন্য, ধৰ্ম্মের জন্য, ন্যায়ের জন্য আত্মমুখ বিসর্জন করিবার তাহার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল। ইহার পূৰ্ব্বে র্তাহার মুখে “ হৃৎপিণ্ড উৎপাটন” করিবার কথাও আমরা দুই একবার শুনিয়াছি । আমাদের বোধ হয়, আবশ্যক হইলে তিনি তাহাও করিতে পারিতেন । এ কথাতে যদি পাঠিকাগণ সন্তুষ্ট না হয়েন, তবে আমরা নাচার ! ইন্দ্রনাথের প্রতি বিমল যে উন্মত্তের স্থায় আসক্ত হইয়াছিলেন, তাহ পূৰ্ব্ব পরিচ্ছেদেই স্পষ্ট প্রতীয়মান হইয়াছে। যেদিন দুর্গে চারি চক্ষুর মিলন হইয়াছিল, সেই দিনই বিমলা পাগলিনী হইয়াছিলেন । কিন্তু গৃহে প্রত্যাগমন করিয়া অবধি সেই প্রেম গাঢ়ভূত হইবারও অনেক কারণ ছিল। গৃহে যদি বিমলার অনেক সঙ্গী বা সঙ্গিনী থাকিত, তাহ হইলে তাহাদের সহিত আমোদ প্রমোদ করিয়া কালক্রমে মহেশ্বর-মন্দিরের কথা বিস্তৃত হইতে পারিক্তেন । কিন্তু গৃহে অনেক পরিবার থাকিলে সতীশচন্দ্রেরও শকুনির চক্রান্ত সাধনে ব্যাঘাত হইতে পারে, এইজন্য সে গৃহে অধিক লোক থাকিতে পাইত না । সচরাচর হিন্দু জমাদারের বাটী যেরূপ জ্ঞাতি, কুটুম্ব, কুটুম্বিনীতে পরিপূর্ণ থাকে, সতীশচন্দ্রের বাট সেরূপ ছিল না । সুতরাং বিমলা অনেক সময়ে একাকী বসিয়া থাকিতেন,—সে সময়ে প্রথম প্রেমের চিন্তার মত তার কোন চিন্তা ভাল লাগে ? দিন গত হইভে লাগিল ; মাস গত হইতে লাগিল ; সেই চিন্তা গাঢ়ভূত হইতে লাগিল – তাহার সঙ্গে সঙ্গে হৃদয়ে প্রেম গাঢ়ভূত হইতে লাগিল । গৃহে যদি বিমলার সুথের কারণ থাকিত, ভালবাসার পাত্র কেহ থাকিত, তাহা হইলে সেই সুখে অভিভূত হইয়া বা সেই পত্রিকে (ভ্রাতাই হউক, ভগিনীই হউক্ ) ভালবাসিয়া বিমলা মহেশ্বর-মন্দিরের চিন্তা কথঞ্চিৎ বিস্কৃত হইতে পারিতেন । কিন্তু সতীশচন্দ্রের বংশের মধ্যে বিমলা একাকী, প্রাণের সহিত ভালবাসিবেন এরূপ একজনও লোক তথায় ছিল না । আর সুখ,--বিমলার সুথ কি, জগতে বিমলার সুখের কারণ কিছুই ছিল না । পিতা দূরে গিয়াছেন,—যুদ্ধক্ষেত্রে জীবন সকল সময়েই অনিশ্চিত, তাহাতে আবার শকুনির যেরূপ ধূৰ্ত্ততা, বিমলার পিতার জন্ত সৰ্ব্বদাই ভয় হইত। আর গৃহে সেই পিশাচ শকুনি বিমলাকে বিবাহ করিবার জন্য দিবারাত্রি জালাতন করিতেছে। তাহার উন্নত চরিত্র ও স্থির সহিষ্ণুতা সত্ত্বেও তিনি এত কষ্ট সহ করিতে পারিতেন না, এত দুঃখচিন্তা সহ্য করিতে