পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

షి 33 বঙ্গবিজেতা । উপাসনা সাঙ্গ হইলে বিমলা বহিরে তালিলেন, আসিয়া যাহা দেখিলেন, তাহাতে হাসিও আসিল, কান্নাও আসিল । দেখিলেন, সরলা একটী মৃন্ময়-কলস কক্ষে লইয়া তাহার জন্য অপেক্ষা করিতেছে। সরলা বলিল, “ বিমলা, তোমার কলগ কই ? অনেক বেলা হইয়াছে, ঘাটে যাইবে না ?” বিমল বিস্মিত হইয়। জিজ্ঞাসা করিলেন, “ কেন ? একি সরল, কলস কেন ?” সর । “ ঘাটে জল তানিতে যাইতেছি । বেলা হইয়াছে, এক্ষণও জল আনিলাম না, রান্না হইবে কথন ? আমি তোমার জন্তই দাড়াইয়া আছি ।” বিম । * রান্না অনেকক্ষণ আরম্ভ হইয়াছে । আমরা ঘাটে যাইব কেন, আমরা জল আনিব কেন ?” সর । " তবে কে আনিবে ? রুদ্রপুরে ত আপনারাই জল আনিতাম ।” বিমলার চক্ষে জল ত্যাসিল । সরলার হস্ত হইতে কলস লইয়া য়াথিয়া দিয়া তাহাকে সক্ষেহে বলিলেন,— “ আমাদের দাস-দাসী তাছে, তাহার। সব কাৰ্য্য করিবে, আমাদের কিছু করিতে হইবে না। যাও, তুমি মার কাছে যাও, তিনি এতক্ষণ উঠিয়াছেন ।” সরল অতিশয় লজ্জিত হইয়৷ মতায় নিকট গমন করিল ;–বিমলা আপন কক্ষে প্রস্থান করিলেন । দেখিলেন, শকুনি তথায় অপেক্ষা করিতেছেন । দেখিয়া শিহরিয়া উঠিলেন, গাত্রের রক্ত শুকাইয়া গেল । শকুনি স্থিরভাবে দণ্ডায়মান হইয়া বিমলার দিকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন । সৰ্প যেরূপ ভেককে ভক্ষণ করিবার অগ্রে নিরীক্ষণ করে, সেইরূপ শকুনি বিমলার দিকে অনেকক্ষণ নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন । বিমলাও নিম্পনশরীরে দণ্ডায়মান হইয়া ভূমিদিকে একদৃষ্টি চাহিতেছিলেন। র্তাহার হৃদয় ভয়ে ও ক্রোধে জর্জরীভূত হইতেছিল। পূৰ্ব্বরাত্রির কথা স্মরণ করিলেন, আজি দুই মাস অবধি জগতে যে একমাত্র মুখের আশা করিয়াছিলেন, সে আশা দূর হইয়াছে,—নারী-জীবনের একমাত্র আরাধ্য যে প্রেমের আশা করিয়াছিলেন, সে প্রেমে জন্মের মত জলাঞ্জলি দিয়াছিলেন,–হৃদয়ের হৃদয়ে যে প্রতিমাকে স্থান দিয়াছিলেন, সে প্রতিম চূর্ণ হইয়ছে, তাহার সঙ্গে তা হার হৃদয়ও একেবারে চুর্ণ হইয়াছে। সেই সকল চিন্তা করিতে করিতে বিমলা অস্থির হইলেন, চক্ষে একবিন্দু জল আসিল, প্রকাশ্বে বলিলেন –