পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গবিজেতা।আশঙ্কা হইতেছে, এ ব্রত হইতে অনিষ্টের সম্ভাবনা। ভগিনি, এখনও ক্ষান্ত হও।” | মহাশ্বেতা বলিলেন, “ভ্রাতঃ, এ অনুরোধ হইতে আমাকে মর্জিনা করুন। এ ব্রত আমার প্রাণের অংশস্বরূপ ও জীবনের অবলম্বনস্বরূপ। হইয়াছে। এত শোেক, এত মনস্তাপ সহ্য করিয়া যে আমি জীবিত আছি, এই ভয়ানক অবস্থার পরিবর্তনেও যে আমি স্বচ্ছন্দে আছি, সে কেবল এই ভীষণ বৈনির্যাতন ব্রতের নিমিত্ত। যেদিন ব্রত উদযাপন করিব, সে দিন আমাকে জীবন ত্যাগ করিতে হইবে।” এই উত্তর শ্রবণ করিয়া শিখণ্ডিবাহন ব্রতত্যাগের অনুরোধ হইতে একবারে নিরস্ত হইলেন। ক্ষণেক পর বলিলেন, “বৈনির্যাতনের কোন বিশেষ উপায় অবলম্বন করিতেছ?” “ আমি এক সিদ্ধ পুরুষের নিকট এক ভীষণ যন্ত্র লইয়াছি। তিনি এই মন্ত্রের সাধনের জন্য যে অনুষ্ঠান বলিয়া দিয়াছেন তাহাও ভীষণ, কিন্তু সে অনুষ্ঠানে আমি স্থিরপ্রতিজ্ঞ হইয়াছি। প্রত্যহ সন্ধ্যার সময় স্নান করিয়া নিশা দ্বিপ্রহব পর্যন্ত দেবদেব মহাদেবের সেই মন্ত্রদ্বারা আরাধনা করিব,—যতদিন মহাদেব শনিপাত না করেন, ততদিন কন্যা অবিবাহিতা থাকিবে;-সপ্তম বর্ষের মধ্যে শত্রুনিপাত না হইলে কুমারী কন্যাকে মহাদেবের নিকট হত্যা দিয়া চিরোহণ করিব।” অনেকক্ষণ উভয়েই নিস্তব্ধ হইয়া রহিলেন। ব্রহ্মচারী পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমার ব্রত কি, তাহা আমি অবগত আছি। জিজ্ঞাসা করিয়া ছিলাম, বৈরনির্যাতন সাধনের জন্য এই ব্রতধারণ ভিন্ন অন্য কোন উপার অবলম্বন করয়াছ?' | মহাশ্বেতা গভীরভাবে উত্তর করিলেন, “ যিনি এই বিপুল সংসার সৃষ্টি করিয়াছেন, তাঁহার সহায়তা লাভ অপেক্ষা স্ত্রীলোকে আর কি উপায় অবলম্বন করিতে পারে?” সরলস্বভাব ব্রহ্মচারী মহাশ্বেতাকে উপরি উক্ত ভীষণ ব্রত হইতে নিরস্ত করিবারী জন্য আর একবার চেষ্টা করিলেন। মহাশ্বেতা বুঝিতে পারিয়া বলিলেন, “আপনি পূর্বকথা সকল জানিলে এপ্রকার অনুরোধ করিতেন। না,~-আমি নিবেদন করিতেছি, শ্রবণ করুন। আর মহাত্মা চন্দ্রশেথরকেও এই সকল কথ্য জানাইবেন।” পূর্ব্বকথা স্মরণ করিতে করিতে মহাশ্বেতার শরীর কম্পিত হইতে