পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰঙ্গবিজেতা । y} দাদী ইন্দ্রনাথের জন্য আপন বস্ত্র দ্বারা সেই তৃণশয্যা মণ্ডিত করিয়া যাইত । পাঠানেরা ইন্দ্রনাথকে দিনের মধ্যে কেবল একবার মাত্র অপকৃষ্ট আহার দিত, দাসী আপনি অনাহারে থাকিয় ইন্দ্রনাথকে নানাপ্রকার সুপথ্য আনিয়া দিত, ইন্দ্রনাথ তাহ জানিতে পারিতেন না। ইন্দ্রনাথের পীড়ার সময় পাঠানের কোম চিকিৎসক পাঠায় নাই । দাদী, ইন্দ্রনাথ স্থপ্ত বা পীড়ায় জ্ঞানশূন্ত থাকিলে প্তাহার ক্ষতগুলি জলে ধৌত করিয়া পুনরায় পরিষ্কার বস্ত্রে বাধিয়া দিত। সেই কৰুণা-জলসেচনে ইন্দ্রনাথের ক্ষত আরাম হইতে লাগিল, তিনি দিন দিন আরোগ্যলাভ করিতে লাগিলেন। ইন্দ্রনাথ প্রার আপন চিন্তায় ব্যস্ত থাকিতেন, তথাপি সময়ে সময়ে দাসীর দুঃথ এক একবার লক্ষ্য করিতেন । অন্ধকারে দাসীকে স্পষ্ট দেখিতে পাইতেন না, সস্নেহে কথা কহিতে চাহিলে দাসী ধীরে ধীরে প্রহরীর দিকে অঙ্গুলী নির্দেশ করিত। ইন্দ্রনাথ আবার নিস্তব্ধ হইয়া আপন চিন্তায় অভিভূত হইতেন। প্রহরীগণ দাসীর এই স্বাভাবিক করুণ দেখিয়া কখন কখন উপহাস করিত, বলিত, “এ বিবি, এ হিন্দু কি তোমাকে সাদী করিবে ?” এরূপ উপহাসে দাসী বিরক্ত হইত না, কখন কখন উত্তর দিত, কখন কখন প্রহরীদিগকে তুরাপান করিতে দিত। সুতরাং সকল প্রহরীই দাসীর উপর অতিশয় সন্তুষ্ট ছিল । সমস্ত রাত্ৰি দণ্ডায়মান হইয়া চৌকী দিবার সময় সেই নবপ্রস্ফੱਚ পদ্মের ন্যায় সুন্দরী দাসীর কথা ভাবিত,—নিদ্রার সময়ে স্বপ্নে সাকী ও সুরাপেয়ালার কথা ভাবিত । অদ্য রজনীতে দাসী রক্ষকদ্বয়কে সুরাপান করিতে দিবে প্রতিজ্ঞা করিয়াছিল। য়জনী প্রায় এক প্রহর হইয়াছিল, দাসী স্বর লইয়া উপস্থিত হইল। দেখিয়া প্রহরীদ্বয়ের মন একেবারে আলাদে পরিপূর্ণ হইল। একে সেই স্বৰ্গীয় সুরা তাহার উপর কুরঙ্গনয়ন সাকী স্বহস্তেঢালিয়া দিতেছে,—প্রহরীদ্বয় কখন কখন দুই একটা বায়েৎ শুনিয়াছিল, হুরাদেবীর প্রভাবে সেই বায়েৎ মনে পড়িতে লাগিল। ক্রমে স্বর মস্তকে উঠিতে লাগিল, প্রজনী দ্বিগ্রহরের মধ্যে প্রহরীদ্বয় অজ্ঞানাবস্থায় শয়ন করিয়া পেয়ালা ও সান্ধীর স্বপ্ন দেখিতে লাগিল। দাসী কারাগারে প্রবেশ করিল ৷ রজনী দ্বিপ্রহর হইয়াছে । আজি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। গভীর নীল আকাশে সহস্ৰ মেঘ রাশীকৃত হইতেছে, দুরে কিছুই দেখা যায় না । দুরে গঙ্গানদী অতি শাক্ত মৃদ্ধ কল কল শস্বে প্রবাহিত হইতেছে। তাহার