বঙ্গবিজেতা । 3 Sసి আছে তাহা তোমাকে দিলাম।” এই বলিয়া আপন বাহু হইতে সুবর্ণ বলয় দাসীকে দিতে উদ্যত হইলেন । দাদী দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া উত্তর করিলেন,— “ ইন্দ্রনাথ ! আমি ভিখারিণী বটে, কিন্তু অর্থভিক্ষা করি না ।" বিমলার কণ্ঠধ্বনি যে একবার শুনিয়াছে সে কদাচ বিস্তৃত হইতে পারে না । ইন্দ্রনাথ শিহরিয়া উঠিয়া বলিলেন,— “একি ভিখারিণি ! তুমি আমার জন্য এত কষ্ট সহ করিয়াছ, দাসীবেশ ধারণ করিয়াছ,--শত্রু শিবিরে আগমন করিয়াছ ?” বিমল গম্ভীরস্বরে উত্তর করিলেন,—“ জগতে কোন্ স্থান আছে,— নরকে কোন স্থান আছে, যথায় প্রতিজ্ঞসিদ্ধির জন্য নারী যাইতে ভয় করে ?” ইন্দ্রনাথ বিস্মিত হইয়া একদৃষ্টিতে বিমলার মুখের দিকে চাহিয়া - রহিলেন । বিমল বলিলেন, “ইন্দ্রনাথ ! আমি আপনার উদ্ধারের উপায় সংকল্প করিয়াছি,–প্রহরীগণ চৈতন্যশূন্য হইয়াছে—আপনি রমণীর বেশ করিয়া চলিয়া যাউন, পথে জিজ্ঞাসা করিবার কেহ নাই,—যদি কেহ জিজ্ঞাসা করে বলিবেন, ‘ আমি ভিখারিণী দাসী ৷ ” ইন্দ্রনাথ উত্তর করিলেন, “আমি শক্রর হস্ত হইতে, মৃত্যুর হস্ত হইতে অন্ধকারে রমণীর বেশ ধারণ করির পলাইব না,—সে পুরুষের কার্য্য নহে । ” মানিনী বিমলার বদনমণ্ডল আরক্তবর্ণ হইল, ক্রোধ সম্বরণ করিয়া ধীরে ধীরে বলিলেন,— -
- স্ত্রীজাতি আপনাদিগের ঘৃণার পাত্র, বীরপুরুষ তাহাদিগের বেশ ধারণ করিতে স্বীকার করিবে কিজছ ?”
ইন্দ্রনাথ মৰ্ম্মাস্তিক ব্যথিত ও লজ্জিত হইয়া বলিলেন, “ ভিখারিণি ! আমাকে ক্ষমা কর, অামি তাহ বলি নাই । রমণী আমাদিগের প্রেমের । পাত্র, আমাদিগের জীবনের জীবন । বিশেষ তুমি আমার একদিন জীযন রক্ষা করিয়াছ, অদ্য আমার রক্ষার জন্ত দাসীবৃত্তি স্বীকার করিরাছ, সে দিন আমি এ উপকার বিস্তৃত হইব, যে দিন তোমাকে তাছল্য করিব, ভগবানৃ যেন সেই দিন আমার নিধন সাধন করেন ।” বিমলা ধীরস্বরে বলিলেন, “ তবে রমণীর বেশ পরিধান করিতে সঙ্কোচ করিতেছেন কিজহু ?” ফ