বঙ্গবিজেতা । › ግዕ উপর দিয়া অশ্ব লম্ফ দিয়া উল্লঙ্ঘন করিয়া যাইল, কতকগুলি অশ্ব ও অশ্বারোহী শক্রর অনিবাৰ্য্য বর্শাঘাতে প্রাণত্যাগ করিল, কিন্তু ইন্দ্রনাথের কাৰ্য্য সাধন হইল, সে রেখা উত্তীর্ণ হইলেন । পাঠানগণ তঙ্গ দিয়া চারিদিকে পলাইল, ইন্দ্রনাথের পদাতিক সৈন্যগণ আসিয়া তাহদের শিবিরে অগ্নিদান করিল | তখন ইন্দ্রনাথ একবার পশ্চাতে চাহিয়া দেখিলেন, শত্রুর চিচুমাত্র নাই, শত্রুদের অবস্থা দেখিয়া তাহার মনে কিঞ্চিৎ দুঃখ হুইল । দেখিলেন, নিরাপদে প্রত্যাবৰ্ত্তন করা যার । সম্মুথে দেখিলেন শক্রসেন রাশি রাশি সজ্জিত হইয়া দণ্ডায়মান রহিয়াছে ও পরিখা রক্ষা করিতেছে। মনে মনে ভাবিলেন, “ এ পর্য্যন্ত আমাদের অধিক ক্ষতি হয় নাই, বোধ হয়, অশ্বারোহী ও পদাতিক এক শত মাত্র হত হইয়াছে, শক্ররা পরিখার বাহিরে ষে তিন সহস্র ছিল সমস্তই প্রায় হত হইরাছে। সম্মুখে নিশ্চয় বিনাশ, এই স্থান হইতে প্রত্যাবৰ্ত্তন করা কৰ্ত্তব্য । কিন্তু ভিখারিণি ! দুই বার আমার জীবনরক্ষা করিরছি, তোমার জীবনরক্ষা করিব অথবা প্রাণত্যগ করিব।” “ পরিখা পার হও” এই বলিয়া বেগে অশ্ব ধাবিত করিলেন । কিন্তু এবার তাহার গতিরোধ হইল। পরিথার অপর পাশ্বে সৈন্তরাশি সজ্জিত ছিল, অশ্বারোহীগণ উঠিতে উঠিতে তাহার। আসিয়৷ গতিরোধ করিল, মুহূৰ্ত্তমাত্র ভীষণ যুদ্ধ হইল, অশ্ব ও অশ্বারোহীগণ বেগে নীচে নিক্ষিপ্ত হইল, অনেকের প্রাণসংহার হইল। সতর্ক পাঠানের স্বয়ং নীচে না থাকিরা পুনরায় উপরে যাইয়া পুনরায় আক্রমণ প্রতীক্ষা করিতে লাগিল। অশ্বারোহীদিগের মস্তক হইতে পদ পর্যন্ত শোণিত ও কদমে আপ্লত হইয়াছে। নিঃশব্দে ধীরে ধীরে তাহারা উঠিলেন। ইন্দ্রনাথ মনে মনে স্থির করিলেন, “এই পরিখা পার হইব কিম্ব এই স্থানে প্রাণত্যাগ করিব।” দ্বিতীয়বার ভীষণ বেগে অশ্বারোহীগণ পরিখা পার হইবার চেষ্টা করিলেন,—দ্বিতীয়বীয় ভীবণ যুদ্ধ হইল, দ্বিতীয়বার অশ্ব ও অশ্বারোহী নীচে নিক্ষিপ্ত হইল। ক্ষতি নাই। তৃতীয়বার ভীষণতর বেগে অশ্ব ধাবিত করিলেন, এবার সৈন্যদিগের মস্তকের উপর লম্ফ দিয়া অশ্বগণ উঠিল,— পরিখা পার হইল । ইন্দ্রনাথ ভগবানকে ধন্যবাদ দিলেন । পঞ্চ শত অশ্বারোহীর মধ্যে তখন কেবল তিন শত জীবিত, আর অন্য দুই শত পরিখায়ু প্রাণত্যাগ করিয়াছে।
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১৭৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।