సిఫిషి বঙ্গবিজেতা । শূন্য হইয়াছিল, সংসার তমোময় হইয়াছিল। এক একটা করিয়া নুটিাশালা র দীপ নিৰ্ব্বাণ হইল, সরল ধীরে ধীরে সেই নাট্যশালা হইতে বিদায় হইবার উদ্যোগ করিল।
- তাজি হৃদয়েশ্বরের আসিবার শেষ দিন, আজি তিনি আসিলেন না কেন ? তিনি কি হতভাগিনীকে ভুলিয়। গিয়াছেন ? তিনি কি জীবিত আছেন ? ভগবান তুমিই জান, তোমার অচিন্তনীয় মানস কে বুঝিতে পারে ? তোমার যাহা মনে লর কর । ইন্দ্রনাথ ! তোমার নিকট ইহজন্মে বিদায় লইলাম, তুমি যদি আমাকে ভুলিয়া থাক, হতভাগিনী তোমাকে ভুলে নাই, হতভাগিনী মৃত্যুর সময় তোমার নাম উচ্চারণ করিতে করিতে মরিবে,—তোমার কথা ভাবিতে ভাবিতে মরিবে, তোমার দেবমূৰ্ত্তি জ্ঞানচক্ষুতে দেখিতে দেখিতে মরিবে। আর তুমি যদি জীবিত থাক, যে অতাগিনী তোমার জন্য প্রাণত্যাগ করিয়াছে, একবার তাহার কথা ভাবিও,—যে ভিখারিণী বিপদে, দুঃখে, দারিদ্র্যে মুহূৰ্ত্তমাত্র তোমার নাম, তোমার চিন্তা বিস্তৃত হয় নাই, একবার তাহার কথা মনে স্থান দিও । আমার আর ভিক্ষা নাই,—পরমেশ্বর তোমাকে ধন দিবেন, মান দিবেন, ক্ষমতা দিবেন, লক্ষ্মীর মত পত্নী দিবেন ; কিন্তু ইন্দ্রনাথ ! সরলার মত তোমাকে কেহ ভাল বাসিতে পরিবে না । দুঃখিনীর ধন ! ভিখারিণীর রত্ন ! জীবনের বায়ু ! নয়নের মণি ! পরমেশ্বর তোমাকে সুথে রাখুন, আর আমার কিছু প্রার্থনীয় নাই ।” সরলার কষ্ট হইল, অজস্র বিগলিত অশ্রুধারায় শুষ্ক বদনমণ্ডল প্লাবিত হইল।
এক্ষণও প্রবল বেগে ঝড় বৃষ্টি হইতেছে, তাহার মধ্যে সরলার বোধ হইল যেন এক অপরূপ ঝনঝন শব্দ হইল। সরলা ধীরে ধীরে কক্ষ হইতে বাহির হইয়া চারিদিকে দেখিল, কিন্তু সে নিবিড় অন্ধকারে কিছুমাত্র দেখিতে পাইল না । অন্ত দিন হইলে সরল ভীত হইত, কিন্তু আজি বালিকার হৃদয়ে ভয় ছিল না,--হতভাগিনীর আর কি হইতে পারে ? যাহা হইবার হউক ! এমত সময়ে উজ্জ্বল বিদুঃৎ-আলোক দেখা দিল । সে আলোকে সরল সম্মুখে কি দেখিতে পাইল । হরি হরি একি ইন্দ্রনাথ! চারিচক্ষুর মিলন হইল, মুহূৰ্ত্তমধ্যে পরস্পর পরস্পরের আলিঙ্গনে বদ্ধ ङ्ङेठा । অনেকক্ষণ দুইজনই বাকৃশূন্য হইয়া নীরবে রহিলেন, সে সময়ে তাহা দের হৃদয়ে যে ভাবের উদয় হইতেছিল, তাহ আমরা বর্ণনা করিতে অক্ষম,