象●● ৰঙ্গবিজেতা l উপেন্দ্ৰ দেখিতে দেখিতে পাগলের ন্যায় হইয়া সেই হৃদয়ের প্রতিমাকে চুম্বন করিতে লাগিলেন । যখন কমলা পুনরায় চৈতন্য লাভ করিয়া নয়ন উন্মীলন করিলেন, দেখিলেন, স্বামীর আলিঙ্গনে রুদ্ধ রহিয়াছেন, স্বামীর ওষ্ঠে তাপনার ওষ্ঠ, স্বামীর হৃদয়ে আপনার হৃদয় । চিরবিরহের পর পুনৰ্ম্মিলনে প্রেমিকযুগলের হৃদয়ে যে অতুল আনন্দ, যে অনিৰ্ব্বচনীয় সুখলহরী উখলিয়া পড়িতেছিল, কাহার সাধ্য তাহ অমৃতব করে ? পরস্পরের মুখ দেখিয়৷ বহুকালের প্রেমকৃষ্ণ নিবারণ করিয়া তাহার যেরূপ উন্মত্তের ন্যায় অপরিসীম আনন্দসাগরে ভ{সিতেছিলেন, কে তাহা অনুভব করিতে পারে ? পরস্পরের হৃদয়ে হৃদয় সংস্থাপন করিয়া যে স্বৰ্গীর শান্তি লাভ করিতেছিলেন, কে অনুভব করিতে পারে । সেরূপ সুখ জগতে নাই, স্ব গেও বিরল ! অনেকক্ষণ পরে উপেন্দ্র বলিলেন, “নিকুঞ্জবাসিনী কমল ! আমি মরি নাই, কিন্তু তোমাকে আর পাইব, আমার আশা ছিল না, গ্রামের লোকে আমাকে বলিয়াছিল, তোমার পীড়ায় কাল হইয়াছে ।” কমলা বলিলেন, “হৃদয়েশ্বর ! আমার সঙ্কট পীড়া হইয়াছিল, কিন্তু অনেক দিন পরে নিস্তার পাইয়াছিলাম । যখন নিস্তার পাইলাম তখন আমি বনাশ্রমে । কিন্তু তুমি যে নৌকায় গিয়াছিলে, লোকে আমাকে বলিল, সে নৌকা ঝড়ে উণ্টইয়া সকলের মৃত্যু হইরাছে । উপে । “সকলের মৃত্যু হইয়াছিল, কিন্তু ঈশ্বর আমাদের উপর সদয়, অদ্যকার রজনীর পুনৰ্ম্মিলনের জন্য আমার প্রাণরক্ষা করিয়াছিলেন । প্রাণরক্ষা করিলেন বটে, কিন্তু আর কিছু রক্ষা করেন নাই, পরিধেয় বস্ত্র পৰ্য্যস্ত আমার ছিল না । ভিক্ষা করিতে করিতে অনেক দিন পর মুক্ষেরে পহুছিলাম । তথায় যাইরা তোমার সম্বন্ধে যে কথা শুনিলাম, ইচ্ছা হইল, নৌকার অন্যান্য লোকের সহিত আমারও মৃত্যু হইলে ভাল হষ্টত ” কম । “ ভগবানের কি বিচিত্র লীলা । বহুদিন হইল তুমি একবার মুচ্ছিত হইয়াছিলে, চৈতন্য প্রাপ্ত হইয়া অামাকে পাইলে ও পাণিগ্রহণ করিলে । আজি আমি মুচ্ছৰ্ণ হইতে চৈতন্য লাভ করিয়া তোমাকে পাইলাম ।” এইরূপ কথা কহিতে কহিতে উভয়ে ইচ্ছাপুরাভিমুখে গমন করিলেন। উভরই পুৰ্ব্বকালের কথা কহিতে লাগিলেন, সে কথা কহিতে কহিতে কমলার বাল্যকালাবধি সমস্ত কথা হৃদয়ে জাগরিত হইল।
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/২০৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।