পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/২১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১ e रझगिpज७ ।। দিল্লীশ্বরের প্রতিনিধি ও সেনাপতির নিকট আমি সেই বীরপুরুষের হত্যার নিমিত্ত বিচার প্রার্থনা করিতেছি।” এই বলিয়া সুরেন্দ্রনাথ রাজার হস্তে কতিপয় খণ্ড কাগজ দিলেন। বিমলা চতুৰ্ব্বেষ্টিত দুর্গ হইতে নৌকাযোগে পলায়ন করিবার সময় এই কাগজ লইয়। গিয়াছিলেন । শকুনির দোষের প্রমাণের অভায ছিল না । শকুনি যে কাগজ জাল করিয়াছিলেন, তাহ রাজার হস্তেই ছিল, তাহ বর বার পাঠ করিয়া দেখিলেন, সেই পত্র সকল সমরসিংহের দ্বারা পাঠান সেনাপতিদিগকে লিখিত হইয়াছিল, এইরূপ অভিযোগে সমরসিংহের প্রাণদণ্ড হয় । কিন্তু সে সকল পত্রে শকুনির হস্তাক্ষর, আর সমরসিংহের মোহয় ; সেই মোহরের প্রতিকৃতি একটা শকুনির নিজ কক্ষে পাওয়া গিয়াছে। তাছাও বিমলা দুর্গ হইতে লইয়া পলায়ন করিয়াছিলেন । তাহার পর ছয় যৎসর কাল মহাশ্বেতা যেরূপে ছিলেন, শকুনির সহস্র চর যেরূপে মহাশ্বেতাকে গ্রাম হইতে গ্রামান্তরে তাড়না করিয়াছিল, যেরূপে মহাশ্বেত কনার-সহিত পরিশেষে চতুৰ্ব্বেষ্টিত দুর্গের অভ্যন্তরে রুদ্ধ হয়েন, কোন বিষয়েই প্রমাণের অভাব ছিল না। আর সতীশচন্দ্রের হত্যার কথা রাজা আপনিই জানিতেন । তখন রাজা টোডরমল্ল সিংহের মত গর্জন করির বলিলেন, “পামর l তোর জীবন পাপরাশিতে পরিপূর্ণ হইয়াছে । এক্ষণও জগদীশ্বরের নিকট প্রার্থনা কর, পরকালে ভাল হইতে পারে, ইহকালে তোর পাপের ক্ষম নাই ।” শকুনি ধীরে ধীরে উত্তর করিলেন, “ আমি নির্দোষী " রাজা আর ক্রোধ সম্বরণ করিতে পারিলেন না, বলিলেন, "জল্লাদ । আর বিলম্বে কায নাই ।” শকুনি তখন বলিলেন, “ মহারাজ ! আপনি আমার শত্রুদিগের সকল কথা শুনিয়াছেন,-আমার একটা নিবেদন আছে।” রাজা বলিলেন, “শীঘ্র নিবেদন কর, তোর আর অধিক পরমায়ু নাই ।” শকুনি গম্ভীরস্বরে বলিতে লাগিলেন, “ আমার দোষ যদি প্রমাণ হইয়। থাকে, তথাপি আমি ব্রাহ্মণ, ব্রাহ্মণ অবধ্য ! আপনি হিন্দুধর্মের গরম ভক্ত, হিন্দুশাস্ত্রে বিশারদ, হিন্দুশাস্ত্রানুসারে ব্রাহ্মণ অবধ্য ! শত সহস্ৰ দোষ করিলেও ব্রাহ্মণ অযধ্য ! আমি নিরাশ্রয় বন্দী, হস্তদ্বয় বদ্ধ রহিয়াছে, যে দিকে নিরীক্ষণ করি, সেই দিকেই আমার শত্রু । সুতরাং আপনার আজ্ঞায় বাধা দিবীর কেহ নাই, আমাকে সহায়তা করিবার কেহ নাই ।