বঙ্গবিজেতা । డిసె “ তোমার ভবিষ্যৎ আকাশ নিবিড় মেঘাচ্ছন্ন ; কৃষ্ণবর্ণ মেঘরাশি ও ঘোর অন্ধকার ভিন্ন আর কিছুই দেখিতে পাই না । সম্প্রতি তুমুল প্রলয় উপস্থিত, তাহার পর কি আছে বলিতে পারি না । তিন দিন মধ্যে ভীষণ ঝড় আসিবে, অদ্যই এ গ্রাম হইতে পলায়ন কর, পলায়ন কর, পলায়ন কর।” সরল ভাতচিত্ত হইল । অমল প্রিয় মর্থীর এইরূপ অবস্থা দেখিয়। পাগলিনাকে উপলক্ষ করিয়া বলিল, “ ধান ভানিতে শিবের গীত,—আমি কি না জিজ্ঞাসা করিলাম, সচয়েয় বিবাহ হইবে কবে, উনি আকাশ, মেঘ, প্রলয়ের কথা আনিলেন । দাড়। . তা, আমি মাগীকে জব্দ করি।” এই বলিয়া সমল পাগলিনীর গায়ে জল দিতে লাগিল, পাগলিনী ধীরে ধীরে দূরে চলিয়া গেল । দুরে যাইয়া পুনরায় সরলার প্রতি দৃষ্টি করিয়৷ বলিল, “পলায়ন কর, পলায়ন কর, পলায়ন কর!” অনুস্তর অদৃশু হইল । এদিকে অন্যান্য কৃষকপত্নীগণ ত্যাসিয়া ঘাটে উপস্থিত হইল। রামী, বামী, শ্যামী, নৃত্যের বেী, হরির মা, ইত্যাদি অনেক গ্রাম্য সুন্দরী অাসিয়া ঘাট আলো (অন্ধকার ? ) করিয়া বসিল । নানাপ্রকার কথাবাৰ্ত্তা ও রঙ্গরমে ঘাট জমকাইয়া তুলিল । ইচ্ছামতী নদী এত সৌন্দর্য্যের ছটা দেখিয় আনন্দে স্ফীত হইয়া কল্ কলু শব্দে প্রবাহিত হইতে লাগিল ; গ্রাম্য সুন্দরীরাও আনন্দে কল কলু শব্দে গল্প আরম্ভ করিলেন। গল্পের মধ্যে অল্পবয়স্ক র স্বামীর কথা ও প্রাচীন রা পরনিন্দার কথা আনিলেন। সরল ও অমল কলসে জল লইয়া নিজ নিজ গৃহে অমিল । অমলার স্বামীর সহিত পাঠক মহাশয় অগ্ৰেই পরিচিত হইয়ছেন । নবীনদাস সে গ্রামের একজন মহাজন ছিল ও অনেক প্রকার ব্যবসায়ও করিত। তাহার স্বভাব অতি শাস্ত ও সরল । তাহার কিঞ্চিৎ পরিমাণে সঙ্গতিও ছিল ৷ ৪০1৫০ বিঘা জমি, ২০ ২৫টা গরু, ৪৫খান লাঙ্গল ও বাটীর মধ্যে আট দশটা গোল ছিল । আর লোকের মুখে এমনও শুনা যাইত যে নগদ কিছু টাকা মাটীতে পুতিয়া রাখিয়াছিল । ইহা ভিন্ন আপন পত্নীকে অনেক গহনা ও দিয়াছিল । প্রথম পক্ষের স্ত্রীর মৃত্যুর পর প্রায় ৩৫ বৎসর বয়সের সময় দশমবর্ষীয়া অমলাকে বিবাহ করে । এখনও বৃদ্ধ হয় নাই, কিন্তু অমল উপহাস করিয়া তাহাকে “ বৃদ্ধ স্বামী” বলিয়াই ডাকিত । অমল স্নেহবর্তী ভjর্যা], কিন্তু অত্যন্ত রসিক । “ বৃদ্ধ স্বামীর,” সেবা শুশ্ৰুষা করিত, কিন্তু দিবারাত্রি উপহাস করিতেও ক্ষাত্ত
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/২৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।