পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খঙ্গবিজেতা । ર૭ একাকিনী এতক্ষণ কায করিতেছ কেন ?" সরলা বলিল,-“ আজি চিন্তা হাটে গিয়াছে, সেইজন্য দুইজনের কায আমিই করিতেছি। তুমি বস, মা পূজা করিতে গিয়াছেন, দুই প্রহর রাত্রির আগে আসিবেন না ।” এই বলিয়া সরলা ইন্দ্রনাথকে আসন আনিয়া দিল । *. এতক্ষণ একাকিনী থাকিয়া সরলা যেরূপ স্নান হইয়াছিল, চিঙ্গপরিচি বন্ধুকে অনেক দিন পরে দেখিয় সেইরূপ আগ্রহ ও আনন্দের সহিত কথাবার্তা কহিতে লাগিল । সরলার কি কথা ? সরলচিত্ত বালিকার যে কথা, সরল। সেই কথাই কহিতেছিল । কখন মাতার কথা কহিতেছিল ; কখন আপন কাৰ্য্যের কথা কহিতেছিল ; কথন আপমি যে সুন্দর সুন্দর চিত্র আঁকিয়াছিল, তাহাই ইন্দ্রনাথকে দেখাইতেছিল ; কখন ক্ষুদ্র উদ্যানে । লইয়া গিয়া আপনি যে পুপচার। রোপণ করিয়াছিল, তাহাই দেখাইতেছিল। ইন্দ্রনাথ আগ্রহপূর্বক তাছাই শুনিতে ও দেখিতেছিলেন । ক্রমে ক্রমে নিবিড় বৃক্ষাবলীর ভিতর দিয়া পূর্ণচন্ত্রের উদয় হইল। প্রথমে আকাশ সুবর্ণ বর্ণ হুইয়। আসিল, ক্রমে ক্রমে বৃক্ষপত্রের ভিতর দিয়া উজ্জ্বল পূর্ণচত্রের আলোক দেখা যাইতে লাগিল। কিযুৎক্ষণ পরে চন্দ্র উচ্চে আয়োহণ করিয়া নীল আকাশে স্বর্ণ-আলোক বিস্তার করিলেন । লে আলোকে সরলার সুগোল শরীর প্লাবিত করিল ; সুপার বদনমণ্ডলের কিশোর ভাব বৰ্দ্ধন করিল ; মুহাসপরিপূর্ণ ওষ্ঠস্বয় আরও মধুরিমাময় করিল ; শাস্তজ্যোতিঃ নয়নদ্বয় স্নেহৱসে আপ্লুত করিল। সরলা কখনও পুষ্পচয়ন করিয়া ইন্দ্রনাথকে দিতেছে, কখন বা আনন্দোৎফুল্লনয়নে চন্দ্রের দিকে চাহিয়া রহিয়াছে ও সেই সৌন্দর্য্যের প্রশংসা করিতেছে। কতকগুলি সুগন্ধ পুষ্পচয়ন করিয়া একছড়া সুন্ধর মালা রচনা করিল। “ দেথ দেখি, কেমণ সরস মালা গাখিলাম!” বলিয়া লীলাক্রমে সেই মালা ইন্দ্রনাথের মস্তকে জড়াইয়৷ দিল। মালা স্রস্ত হইয়া গলায় পড়িলশ ইন্দ্রনাথ বলিলেন, “ সরল, আমাকে কি মাল্য দান করিলে ?” সয়লা কুষ্ঠিত হইল, চক্ষুর পাতা দুখানি ধীরে ধীরে পতিত হইল, মুখে আর কখা সরিল না। ইন্দ্রনাথেরও মুখে কথা নাই, সস্নেহনয়নে সেই সুবর্ণপুণ্ডলীর দিকে নিরীক্ষণ করিতেছেন, সেই নিবিড় কৃষ্ণ কুস্তল, সেই মুবঙ্কিম জযুগল, সেই প্রেমপ্লাবিত নয়ন, সেই স্মিতমধুর ওষ্ঠাধর, সেই মোহন । মুখমণ্ডল, সেই বালিকার সরল হয়ে আলোচনা করিতেছিলেন। অনেকক্ষণ পরে বলিলেন, " সরলা ৷” • *