পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

《念 ጳ8 বঙ্গবিজেতা । ইন্দ্রনাথের গম্ভীর ভাবে সরল কিঞ্চিৎ বিস্মিত হইয় তাহার’ মুখের দিকে চাহিল । দেখিল, তাহার মান মুখ আরও স্নান হইয়াছে। " ইন্দ্রনাথ পুনরায় বলিলেন, “ সরলা ! বোধ হয়, তোমার সহিত আমার এই শেষ দেখা । " সরলার প্রফুল্ল নয়নে একবিন্দু জল আসিল, বলিল, “কেন, তুমি কি আর রুদ্রপুরে থাকিবে না ?” ইন্দ্র। “ না ; আমি আর রুদ্রপুরে থাকিব না ; কারণ বোধ হয়, তুমি পরে জানিতে পরিবে ।" সর । " কেন, সই কি তোমাকে বাড়ীতে রাখিতে পারে না ? তুমি কেন আমাদের বাড়া থাক না ? আমি মাকে বলিলে ম৷ সন্মত হবেন । আমরা যাহা উপাৰ্জন করি, তাহাতে তোমার এখানে কোন কষ্ট হইবে না, স্বচ্ছন্দে থাকিবে । তুমি তামাদের বাড়ী থাক।” ইন্দ্রনাথের চক্ষু জলে প্লাবিত হইল। মুখ ফিরাইলেন, অনেক কষ্টে অশ্র সম্বরণ করিলেন, কহিলেন, “ সরলা ! তোমার দয়ার শরীর, তোমার স্নেহ অসীম –আমায় থাইবার কষ্ট কিছু নাই । তোমার সই আমাকে বিশেষ যত্ব করেন ; না করিলেও আমার অন্য স্থানে খাইবার সংস্থান আছে, আমি অন্য কারণে গ্রাম ত্যাগ করিতেছি।” সর । “ নিতান্তই কি গ্রাম জ্যাগ করিতে হইবে ?” 啤 ইন্দ্র। “ সরল, আমি চলিয়া গেলে কি তোমার মনে কষ্ট হইবে ?” সর । “ কষ্ট হইবে না ? আমাদের আর কে আছে বল ?” ইন্দ্রনাথ পুনরায় মুখ ফিরাইলেন । রাজা সমরসিংহের দুহিতার বান্ধবের মধ্যে এক কৃষকপত্নী অমলা, আর এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ । ইন্দ্রনাথ অতি কষ্টে আশ্রবেগ সম্বরণ করিলেন এবং পুনরায় কহিলেন, “ সরল, তোমার মনের কষ্ট দেখিয়া আমার হৃদয় বিদীর্ণ হইতেছে ; কিন্তু আমি কোন প্রকারে আর এ গ্রামে থাকিতে পারি না । সরল, বিদায় দাও ; যদি বাচিয়া খাকি, যদি কাৰ্য্য সিদ্ধ হয়, পুনরায় দেখা করিব ; না হয়, এই শেষ ৷ ” ইন্দ্রনাথের মুখ হইতে তার কথা বাহির হইল না, সরলার প্রশাস্ত নীলোৎপলসদৃশ চক্ষুতে অশ্রু টল্‌ টল্‌ করিতে লাগিল। প্রথমে একটা দুইট বড় অশ্রুবিন্দু বদনমগুলে পড়িল, শীঘ্রই দূরবিগলিত অশ্রধারা বক্ষঃস্থল প্লাবিত করিল । সরলা ইন্দ্রনাথকে ভ্রাতার মত ভালবাসিত, তাহ ভিন্ন অন্য কোন প্রকার ভাববাসা আপন হৃদয়কোরকে প্রবেশ করিয়াছে, তাছা জনিত না ; বিদায় দিতে এমন যাতনা হইবে, তাই ,