বঙ্গবিজেতা । ఫిసె স্ট্রে সময় সুরেন্দ্রনাথ চন্দ্রশেখরের নিকট গিয়াছিলেন, তখন তাহার ছদ্মবের্ণ—তখনই তিনি ইন্দ্রনাথ নাম ধারণ করিয়াছিলেন । ছদ্মবেশেই তিনি দেশে দেশে অনুসন্ধান করিয়া মহাশ্বেতার সাক্ষাৎ পটুয়াছিলেন, ছদ্মবেশেই র্তাহার সহিত সেই নিস্তব্ধ আশ্রমে সরলার প্রথম সাক্ষাৎ হয় । ইচ্ছামতী-তীরে কতবার তিনি বালিকাকে থেলা দিয়াছেন ; কতবায় তাহাকে গল্প বলিয়াছেন ; কতবার তাহাকে ক্রোড়ে করিয়া চুম্বন করিয়াছেন । এইরূপে ছয় বৎসর পৰ্য্যন্ত ইন্দ্রনাথ ও সরলার মধ্যে সোদর সোদরার প্রেম জন্মিয়াছিল । তাহ ভিন্ন অন্য কোন প্রকার ভাব অস্তরে উদয় হইয়াছে, তাহা আদ্যকার এই পূর্ণিমা রজনীর পূৰ্ব্বে কেহই জানিতে পারেন নাই । প্রেমের কি প্রবল পরাক্রম ! যে সরলার বালিকাচ্ছদরে কখনও কিছুমাত্র বৈলক্ষণ্য হয় নাই, আজি সেই সরলার হৃদয় চঞ্চল হইল । বাল্যকালাবধি সুরেন্দ্রনাথ যে পরোপ কায়ব্ৰত অবলম্বন করিয়াছিলেন,—আজি তাহা ত্যাগ করিয়া প্রেমব্রত অবলম্বন করিলেন । আজি তিনি পরোপকারী সুরেন্দ্রনাথ মহেন, ঘোর স্বার্থপর ইন্দ্রনাথ । 象 প্রেমপরারণত আর স্বার্থপরতা কি এক ? যে পবিত্র প্রেমের উপরোধে লোকে প্রণয়িনীর উপকারার্থ আত্মবিসর্জন পর্য্যন্ত করিতে উদ্যত হয়, সে পবিত্র প্রেম কি স্বার্থপরতার অঙ্গবিশেষ বলিয়া পরিগণিত হইতে পারে ?-কবিগণ যাহাই বলুন, প্রণয়িগণ যাহাই বলুন, আমাদের অভিপ্রায় এই, সেই পবিত্র প্রেম স্বার্থপরতা ভিন্ন আর কিছুই নহে । যে ভাব অববলম্বন করিয়া তুমি জগতের উপকার হইতে বিরত হইলে,—যে ভাবে অন্ধ হইয়া তুমি সমগ্র জগতে কেবল আপন প্রণয়পাত্রের প্রতিকৃতি দেখিতে পাও,—যাহার প্রভাবে তুমি বিবেচনা কর যে, এই সুন্দর নভোমণ্ডল, সুন্দর বৃক্ষলতাদি, নয়নরঞ্জন পুষ্পচয়, কেবল তোমাদের প্রণর ও সুখৰদ্ধনের জন্য স্বষ্ট হইয়াছে,—যে ভাবের প্রভাবে তুমি আত্মসুখ ও আপন প্রণয়িনীর সুখ ভিন্ন আর সকলই ভুলিলে,—সে ভাব স্বার্থপরতা নয় ভ কি ? রজনী দ্বিপ্রহরের সময় মহাশ্বেত পূজা সমাধা করির গৃহে আসিলেন । ইন্দ্রনাথ তাহার নিকট বিদার লইবার জন্যই অপেক্ষা করিতেছেন। ইক্সনাথ বলিলেন ;– “ আপনি যে দৃঢ় ব্রত অবলম্বন করিয়াছেন, তাহাতে সতীশচন্দ্রের নিধন সাধন না করিলে বোধ হয়, আপনার কন্যার পাণিগ্রহণ করিতে পাইব না।” মহাশ্বেত । “ পাইবে না ।” . . .
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/৩৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।