HH ৰঙ্গবিজেতা । ইন্দ্র। “আশীৰ্ব্বাদ করুন,—আমি অদ্যই সেই অভিপ্রার্মে যাত্রা করিতেছি ! আশীৰ্ব্বাদ করুন, অবশুই মনোরথ সিদ্ধ হইবে।” মহা আশীৰ্ব্বাদ করিতেছি, দেবদেব মহেশ্বর তোমার যত্ন সফল করুন। কিন্তু তুমি বালক,-সেই চতুর বুদ্ধিকুশল পামরকে কিরূপে পরাস্ত করিবে, আমার বুদ্ধির অগোচর।” ইন্দ্র। “অধুনা আমারও বুদ্ধির অগোচর, দেথা যাউক কি হয় । ” মহ। “অবশ্যই তোমার জয় হইবে,–ধৰ্ম্মের যদি জয় না হয়, তবে এ সংসার ছারখার হইবে,—কেহ আর দেবদেবীর আরাধনা করিবে না ।” - ইন্দ্রনাথ ক্ষণেক চিন্তা করিয়া বল্লিলেন, “ ধৰ্ম্মের যদি সৰ্ব্বদা জয় হইত, তবে আপনার স্বামী নিধন প্রাপ্ত হইতেন না, সতীশচন্দ্রও বঙ্গদেশের দেওয়ান হইতেন না, মানবজাতি কখন ধৰ্ম্মপথ পরিত্যাগ করিত না । যখন চারিদিকে পাপের গৌরব দেখিতেছি,—যখন অত্যাচারী ও কপটাচারিগণ ধন, মুনি, ঐশ্বৰ্য্য লাভ করিতেছে ; যখন পরমধাৰ্ম্মিক, পবিত্ৰচেতা, পরোপকারিগণ নিপীড়িত ও পদদলিত হইতেছেন ;–তখন আর সংসারের ছারথার হইবার বাকী কি ? যদি সদাই ধৰ্ম্মের জয় থাকিত, তাহা হইলে পাতক ও কপটাচরণ এ সংসার হইতে একবারে দূরীভূত হইত। তথাপি কেন যে অধৰ্ম্মের জয় হয়, কে বলিবে ? ভগবানের লীলাখেলা কে বুঝিতে পারে ?” পরে মহাশ্বেতা বিশ্বেশ্বরী পাগলিনীর কথা ইন্দ্রনাথকে বলিলেন । ইন্দ্রনাথ বিস্মিত হইলেন, বলিলেন, “ এই পাগলিনী মানুষী, কি যোগিনী, কি প্রেতকন্যা, বুঝিতে পারি না, কিন্তু তাহার কথা কখন মিথ্যা হয় নাই।” মহাশ্বেল। "কখন মিথ্যা হয় নাই । আমার স্বামীর মৃত্যুর পূৰ্ব্বে আমাকে ভবিষ্যৎ গণিয়া বলিয়াছিল । আমি স্বামীকে সবিশেষ অবগত করাইয়া সপরিবারে পলাইবার উপদেশ দিলাম। সেই বীরপুরুষ যে উত্তর দিলেন, তাহ আমার স্মৃতিপথে অদ্যপি জাগরিত রহিয়াছে। বলিলেন, ‘ঘোর সংগ্রামস্থলে হিন্দু কি মুসলমান, মোগল কি পাঠান, কেহ কথন সমরসিংহকে পলায়ন করিতে দেখে নাই—আজি পামর সতীশচন্দ্রের ভয়ে পলায়ন করিব ? মরিতে হয় মরিব, যোদ্ধার তাঁহাতে ভয় কি ?’ সুরেন্দ্রনাথ ! পূৰ্ব্বকথা আর তোমাকে কেন বলি ? যে হুতাশন আমার , অন্তঃকরণ দুগ্ধ করিতেছে, তাহ অন্তরেই থাকৃ।” ইন্দ্রনাথ বলিলেন, “ সেইবায় ভিন্ন আরও দুই তিন বার ঐ পাগলিনী যে যে কথা বলিয়াছে, তাহাই সত্য হইয়াছে। আমার পরামর্শে আপনা-r দিগের এই গ্রাম হইতে পলায়ন করা ভিন্ন উপায়ান্তর নাই ।” । \
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/৩৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।