পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গবিজেতা । $34 yেপুরুষ কক্ষে প্রবেশ করিলেন, তাহার বয়ঃক্রম পঞ্চাশ বর্ষ হইবে না ; কিন্তু আকার দেখিলে সহসা ষষ্টি বৎসরের বৃদ্ধ বলিয়া ভ্রম হয়। মস্তকের অধিকাংশ কেশ শুরু, ললাট চিন্তারেখায় অঙ্কিত, শরীরের চৰ্ম্ম শিথিল, সৰ্ব্ব তাঙ্ক ক্ষীণ, তথাপি চক্ষুদ্বয় জ্যোতিৰ্ম্ময় ও মুখমণ্ডলে চিন্তাদেবী সততই অধিষ্ঠান করিতেছেন । ধীর আচরণ, ধীর গমনাগমন, ধীর অথচ তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসঞ্চালন । নানারূপ বহুদূরদর্শিনী বহুদূরব্যাপিনী কল্পনাতে তাহার জীবন ও অন্তঃকরণ চিরকালই পরিপূরিত হইয়। রছিয়াছে । কক্ষে প্রবেশ করিয়া কন্যাকে চিত্তামগ্ন দেখিয়া ক্ষণকাল নিস্তব্ধ রহিলেন । পরে ঈষৎ হাস্যসহকারে ডাকিলেন, “বিমলে ।” বিমলাও পিতাকে দেখিয়া আপন গভীর ভাবনা কিঞ্চিৎ বিস্কৃত হইলেন । বদনমণ্ডলে গম্ভীরভাব ক্রমে অপনীত হইয়া পবিত্র পিতৃস্নেহের আবির্ভাব হইল । পিত। কক্ষে আসিয়াছেন, অনবধানত বশতঃ এতক্ষণ দেখিতে পান নাই, মনে হইয়া কিঞ্চিৎ লজ্জিত হইলেন । সতীশচন্দ্র জিজ্ঞাস। করিলেন, “ বিমলে! এত কি ছুঃখ হইয়াছে যে, মৌনভাবে এতক্ষণ বসিয়। রহিয়াছ ?” # বিমলা উত্তরপ্তারলেন “ আপনি কল্য দুর্গ ত্যাগ করিবেন,—কতদিন আপনাকে দেখিতে পাইব না, কতদিন এই প্রকাও দুর্গ শূন্য থাকিবে – সে চিন্তায় আমার মন অস্থির হইয়াছে—আমি আপন মন শাস্ত করিতে পারিতেছি না । ” পিত। উত্তর করিলেন, “ সে কি বিমলা, কেন মিথ্য ভাবনা করিতেছ ? আমি শীঘ্রই ফিরিয়া আসিব ; আমি কি তোমাকে ছাড়িয়া অধিক দিন থাকিতে পারি ?” বিমলা । “ পিতা, আপনি যে আমাকে অতিশয় স্নেহ করেন তাহ! জানি,—পিত কন্যাকে ইহা অপেক্ষা অধিক স্নেহ করিতে পারে না ।” সতী । “ তবে চিন্তা করিম্ভেছ কেন ? আমি ত প্রতিবৎসরই একবার রাজধানী যাইয়া থাকি, এবার তোমার বিশেষ চিত্ত। কেন ?” বিম। " প্রতিবৎসর আমার এপ্রকার ভাবন হয় না ; এবার সহস} হৃদয়ে ভয় হইয়াছে, কেন জানি না । পিতা, আপনি গৃহে থাকুন, কোথাও যাইবেন না ।” শেষ কথাগুলি অতি অৰ্দ্ধস্কুট মৃদুস্বরে উচ্চারিত হইল—শুনিয়া সতীশ*ন্ত্রের হৃদয়ও যেন আহত ও কিঞ্চিৎ ভীত হইল। ক্ষণেক নিস্তব্ধ থাকিয়া তীশচন্দ্র বলিলেন } t