বঙ্গবিজেত ! وتابيا করিয়াছিলেন, তাহাতে দিল্লীশ্বরের কণামাত্র স্বল রহিল না। সেই সমগ্র সৈন্য একীকৃত হইয়া মুঙ্গেরের নিকটে আসিয়াছিল ও দিন দিন বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইতেছিল । সাগরতরঙ্গের মধ্যে পৰ্ব্বতশিখরের ন্যায় সেই পাঠানসৈন্তের সম্মুখে রাজা টোডরমল্ল মুঙ্গেরে অবস্থিতি করিতেছিলেন,--কিরূপে সেই ক্ষুধাক্লিষ্ট বিদ্রোহোম্মুখ সৈন্য লইয়। সেই শক্ররাশিকে পরাজয় করিবেন, তাহ টোডরমল্লের বিশ্বাসী সেনাপতিগণও অনুভব করিতে পারিতেন না । কেবলমাত্র রাজা টোডরমল্লই নিঃশঙ্কচিত্তে এই বিপদরাশি সত্ত্বেও বিজয়লাভের স্থিরসঙ্কল্প করিয়ছিলেন । বিপদরাশিতে মুহূর্তের জন্যও তাহার স্তুৈর্য্যের বৈলক্ষণ্য ঘটাইতে পারে নাই । ইন্দ্রনাখ শিবিরে আলিয়। মান বিষয়ের চিন্তা করিতেছিলেন, এমত সময়ে এক ভূতা আসিয় তাহার হস্তে একখানি পত্র দিল । পত্র খুলিয়া একবার, দুইবার, তিনবার পাঠ করিলেন ; মৰ্ম্ম গ্রহণ করিতে পারলেন না । পত্রে এইরূপ লিখিতছিল— “ তোমার বুদ্ধিকৌশল দেখিয়া চমৎকৃত হইয়াছি। ভারতবর্ষে যাহাকে কেহ কৌশলে পরাস্ত করিতে পারে নাই, তুমি তাহার চক্ষে ধূলি দিয়াছ । আমরাও ঐ পথ অবলম্বন করিব, কেননা যে পতনোয়ুখ গৃহ অগ্ৰে ত্যাগ করে, সেই বুদ্ধিমান । অদ্য এক প্রহর রজনীতে শ্মশানঘাটে দেখা হইবে।” এ পত্রের কিছুই অর্থ গ্রহণ করিতে পারিলেন না। “ ভারতবর্ষে যাহাকে কেহ কৌশলে পরাস্ত করিতে পারে নাই ”—সে কে ? বোধ হয় রাজা টোডরমল্ল, কিন্তু তাহার চক্ষে ধূল কে দিয়াছে ? পতনোন্মুখ গৃহ কি ? ইন্দ্রনাখের বোধ হইতে লাগিল যে, কোন বিদ্রোহী কর্তৃক এই পত্র লিখিত হইয়াছে,—খশানঘাটে যাওয়া কি কৰ্ত্তব্য ক্ষণেক বিবেচনা করিয়া স্থির করিলেন, যাওয়ায় কোন হানি নাই, বরং কোন গুপ্ত বিষয়ের সন্ধান পাইতেও পারি । নিরূপিত সময় শ্মশানে উপস্থিত হইলেন । তাহার সঙ্গে কেহই নাই, অসিই তাহার একমাত্র সহায় । * রজনী ঘেtয় তমসাচ্ছন্ন, আকাশ নিবিড় মেঘাচ্ছন্ন। নীল মেঘ আকাশে, উড়িতেছে ; এক এক খানি করিয়া সেই মেঘ পশ্চিম দিকে রাশীকৃত হইতেছে ; সেই পশ্চিম দিক্ হইতে ক্ষণে ক্ষণে বিদ্যুৎ দেখা দিতেছে ; বিদ্যুৎআলোকে শ্মশানের তয়ানক বস্তু সকল এক এক বার দেখা যাইতেছে। কোথাও কোথাও সম্প্রতি শবদtহ হইয়াছে, ভস্মরাশির মধ্যে অগ্নি এক এক বার দেখা যাইতেছে ; কোন স্থানে বা শব এখনও দাহ হইতেছে ; উজ্জল অগ্নিশিখা চারিদিকের নিবিড় অন্ধকারকে কিঞ্চিৎ উদ্দীপ্ত করিতেছে । সেই
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/৮৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।