পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গবিজেভ । 统 নবী । “ না, সেরূপ নহে ; আমাদের জর্মীদারপুত্ৰ কত প্রকার বিহ্বল কথা বলেন, কিছু ঠিকানা থাকে না । বোধ হয়, অনেক লেখাপড়া শিখিয়া উন্মত্তের ন্যায় হইয়াছেন।” শিখ । “ কি বলেন, বলিতে পার ?" নবী ৷ ‘ কখন বলেন, বৈরনির্যাতন পরম ধৰ্ম্ম, কখন বলেন, স্ত্রীরত্ন পরম রত্ন,—কেও ইন্দ্রনাথ শৰ্ম্ম ? ঠাকুর প্রণাম ।” এই বলিয়া নবীন দাস পথের একপাশ্বে উপবিষ্ট এক মলিনবসন যুবাপুরুষকে সম্বোধন করিল। যুবক কি চিত্ত করিতেছিলেন, হঠাৎ আপন নাম উচ্চারিত হইতে শুনিয়া ফিরিয়া দেখিলেন, দেখিয়া উঠিয়া পথিকদিগের সঙ্গে চলিলেন। নবীন দাস বলিতে লাগিল,— “ ইনি আমাদের গ্রামের পাগল ঠাকুর। তবে পাগল ঠাকুর! অনেক দিন দেখি নাই কেন ? আমাদের গ্রাম হইতে কোথায় চলিয়া গিয়াছিলে । আর এখনই বা ভূমিতে উপবিষ্ট কেন ? ” ইন্দ্রনাথ উত্তর করিলেন, “ সমস্ত রাত্ৰি চলিয়া শ্রাত্ত হইয়াছিলাম । ’ নবীন পাগলকে আর কিছু না জিজ্ঞাসা করিয়া পূৰ্ব্বোক্ত কথা আরম্ভ করিল,— “ শুনিয়াছি, আমাদের জমাদারপুত্ৰ কথন কখন বলিতেন, বৈরনির্যাতনে পরম মুখ, কথন বলিতেন, স্ত্রীরত্ব পরম রত্ন, কখন বলিতেন, বন্ধুহত্যার মত পাপ নাই, আবার কখন বলিতেন, প্রজার কষ্ট দেখা অপেক্ষা মৃত্যু ভাল | ” * শিখণ্ডিবাহন অনেকক্ষণ চিন্তা করিয়া কহিলেন, “ আমার বোধ হয়, তিনি কোন ভয়ানক পাপ করিয়া থাকিবেন, মহাপীপে চিত্তের উন্মত্তত জন্মে ।’’ নবী । “ তিনি কোন পাপ করিবেন, আমার এমন বিশ্বাস হয় না । ” এই বলিয়। নবীন দাস ক্ষণেক স্থির হইয় যেন পুৰ্ব্বকথা স্মরণ করিতে লাগিল । পুনরায় বলিল, “ তাহার অন্তঃকরণে যে দয়া, তিনি পাপ করিতে পারেন না। আজ প্রায় দ্বাদশ বৎসর হইল, আমি একবার ইচ্ছাপুর গিয়াছিলাম, দেখিলাম দুই চারি জন প্রজা খাজান দিতে পারে। নাই বলিয়া খরে আবদ্ধ আছে । তখন আমাদের জমাদারপুত্র সুরেন্দ্রনাথের বয়স ৫৬ বৎসর হইবে। তিনি লুকাইয়া ঘরের দ্বার খুলিয়া দিলেন ও প্রজাগণের হস্তে দুইটা করিয়া মুদ্র দিলেন। প্রজারা আনন্দে খাজান দিয়া চলিয়া গেল ।” ইন্দ্রনাথ অতিশয় ঔৎসুক্যের সহিত জিজ্ঞাসা করিলেন, “তাহার পর ?",