ఫిఖీ বঙ্গবিজেতা। দেখিলেন, যদিও অনেকস্থানে ক্ষত হইয়াছে তথাপি কোন ক্ষতই গভীর বা সাজঘাতিক নহে । তাহার স্পষ্টই বোধ হইল, সমস্ত রাত্রি উত্তম নিদ্রা হইলে প্রান্তঃকালে শরীরে অধিক বেদন থাকিবে না । সমস্ত রাত্রি উত্তম নিদ্রা হইল । প্রাতঃকালে চক্ষুরুন্মীলন করিয়া ইন্দ্রনাথ দেখিলেন, পার্শ্বে এক পরম সুন্দর যুবক বসিয়া রহিয়াছেন। অনিমেষলোচনে তাহার দিকে দৃষ্টি করিতেছেন, ইন্দ্রনাথের বোধ হইল যেন এই সুপুরুষকে কখন দেখিয়াছেন, কিন্তু কোথায় দেখিয়াছেন, স্মরণ করিতে পারিলেন না । বলিলেন,— “ যুবক ! আপনি আমার প্রাণ দিয়াছেন, আপনি বোধ হর আমাকে জল হইতে উদ্ধার করিয়াছেন, আপনি কে বলুন, কি করিলে এ ঋণ শোধ করিতে পারিব বলুন ? আপনি আমার জীবনরক্ষা করিয়াছেন, রাজা টোডরমল্প কিছুই দিতে অস্বীকৃত হইবেন না।” যুবক উত্তর করিলেন, “ আপনার নিকট অন্য পুরস্কার চাহি না কেবল একটী প্রার্থন আছে। কিন্তু ইন্দ্রনাথ, তামাকে কি ইহার মধ্যে বিস্কৃত হইয়াছ ?” এই কথা বলিয়া বক্তা একটু হাসিলেন । সে সুমিষ্ট অধরে সে সুমিষ্ট হাসি এখনও ইন্দ্রনাথ বিস্কৃত হয়েন নাই ; সে কোকিলনিন্দিত কণ্ঠধ্বনি তিনি এখনও ভুলেন নাই । কাতরতা সত্তেও একেবারে দাড়াইয়া উঠিয়া বলিলেন,— “ রমণীরত্ব ! ভিক্ষারিণি ! আমি জীবিত থাকিতে তোমাকে বিস্তৃত হইব না । কিন্তু এ পুরুষযেশ ”— ইন্দ্রনাথ আরও কিছু বলিতেছিলেন, কিন্তু ভিক্ষারিণী (পাঠক মহাশয়ের পূৰ্ব্বপরিচিত বিমলা) ওষ্ঠের উপর অঙ্গুলী স্থাপন করিলেন। পরে ধীরে ধীরে বলিলেন,— “ আমি স্ত্রীলোক এই নৌকায় কেহ জানে না, জানিলে বিপদ হইবার সম্ভাবনা । এহ্মণে শ্রবণ করুন।” ইন্দ্রনাথ বিস্ময়ে প্রার ছতজ্ঞান হইয়। সেই রমণীর বদনমণ্ডলের উপ: চাহিয়া রছিলেন। সে বদনমণ্ডলের সহসা ভাবান্তর হইল । যে সুহাসিতে চক্ষুদ্ধর উজ্জ্বলতর হইয়াছিল, ওষ্ঠস্বয় মিষ্টতয় হইয়াছিল, সে সুহালি শুকাইয়। যাইয়। মুখ অতিশয় গম্ভীর ভাব ধারণ করিল। অতি গষ্ঠীর স্বরে বিমল বলিতে লাগিলেন,— “ইন্দ্রনাথ ! মহেশ্বরমন্দিরে আপনাকে বলিয়াছিলাম যে, আমার দ্বিতীয় একটী ভিক্ষ আছে। এই ক্ষণেই আমার ডিক্ষ দাম করিতে আপনি
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/৯৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।