বিজেতা । ఫిలో সেইরূপ ধৰ্ম্মপরায়ণ, তাহাকে দেখিলে পুরাকালের মুনিঋষির ন্তায় বোধ হইত, তাহার গ্রামটাকেও তিনি যথার্থই পুরাকালের আশ্রমের দ্যায় করিয়৷ তুলিয়াছিলেন । তিনি অনেক পুরাতন শাস্ত্র পাঠ করিয়াছিলেন ও পুরাতন ঋষিদিগের স্যায় থাকিতে অভিলাষ করিতেন । কতকগুলি শিষ্যের সহিত শাস্ত্রালোচনা করিয়া অনাথ দরিদ্রদিগকে সাহায্য করিয়া একাকী যাগযজ্ঞ করিয়া জীবন অতিবাহিত করিবার সঙ্কল্প করিয়াছিলেন ও সেই গ্রামকে সৰ্ব্বাংশে পুরাকালের আশ্রমের দ্যয় করিয়া তুলিয়াছিলেন। সায়ংকাল উপস্থিত। যে যে আশ্রমবাসিগণ কার্য্যোপলক্ষে দূরে কোথায় যাইয়াছিলেন, তাহারা একে একে আশ্রমাভিমুখে প্রত্যাবর্তন করিতে লাগিলেন ; আশ্রমের শান্ত লতাপাদপের মধ্য হইতে উখিত সায়ংকালের যজ্ঞধূম দেখিতে পাইলেন ; দুই একটা কুটীর হইতে সায়ংকালীন প্রদীপলোক দেখিতে পাইলেন । অtশ্রমের মধ্যে সকলই শাস্ত, নিস্তব্ধ । স্বচ্ছমন৷ ব্রাহ্মণগণ সন্ধ্যার উপাসনা আরম্ভ করিতেছেন, কোন কোন ব্রাহ্মণপত্নী গৃহকাৰ্য্য সমাধা করিতেছেন, কেহ কেহ বা শিশুদিগকে সমবেত করিয়া মহাভারতের পুণ্যকথা গল্প করিতেছেন। ব্রাহ্মণকস্তাগণ কেহব হরিণশিশু লইয়। ক্রীড়া করিতেছেন, কেহ বা হরিণীর নয়নের সহিত স্বীয় বয়স্যার নয়নের বিশালতা ও চঞ্চলতার উপমা দিতেছেন । নদীতীর হইতে রমণীগণ কলস পূরিয়া জল লইয়া আদিতেছেন ; কুটীর-প্রাঙ্গণে হরিণ-হরিণীগণ রোমস্থন করিতেছে । সন্ধ্যার শঙ্খ ঘণ্টা ধ্বনিত হইল। সেই ধ্বনি আশ্রমের সহস্ৰ পাদপে প্রতিহত হইয়। গগনমণ্ডলে উথিত হইতে লাগিল । প্রদোষকালীয় শঙ্খধ্বনি অপেক্ষ মানবহৃদয়ে উপাসনা-উত্তেজক আর কিছুই নাই । সেই পবিত্র ধ্বনিতে যোগীদিগের হৃদয়কবাট উদঘাটিত হইল, তাহারা সকলে একত্রিত হইয়া উচ্চৈঃস্বরে আরাধনা করিতে লাগিলেন। রোদনপটু শিশুকে ক্ষণেক শান্ত করিয়া ব্রাহ্মণপত্নী সেই গীতে যোগ দিলেন, ক্রোড় হইতে কলস .নামাইয় অৰ্দ্ধপথে দাড়াইয়। ব্রাহ্মণকহু গীত গাইলেন, চঞ্চল হরিণশিশুকে 常 ধান্ত দিয়া ক্ষণুেক শান্ত করিয়া কিশোরবয়স্ক সেই আরাধনায় তৎপর হইলেন, ক্রীড়াতৎপর বালক ক্ষণেক ক্রীড়ায় ক্ষান্ত হইয়। সেই গান গাইল,-মাতার ক্রোড়ে শিশুও মাতার মুখ নিরীক্ষণ করিয়া সেই সঙ্গে সঙ্গে সেই গীতে যোগ দিল । অfবাল বৃদ্ধ বনিতার কণ্ঠনিঃস্থত এই অনন্ত গীত সায়ংকালের শঙ্খধ্বনি সঙ্গে সঙ্গে নৈশ গগনে উখিত হইতে লাগিল । গীত সাঙ্গ হইলে সমস্ত আশ্রম পুনরায় তুষ্ণীম্ভাব ধারণ করিল। *
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/৯৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।