পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, পঞ্চমাংশ, উত্তররাঢ়ীয় কায়স্থ কাণ্ড, তৃতীয় খণ্ড).djvu/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* ২ বঙ্গের জাতীক্স ইতিহাস [ ১ম অধ্যায় নিত্যসেবা, ছর্গোৎসব, কালীপূজা প্রভৃতি দেবকাৰ্য্য ছাড়া তিনি রামসাগর নামক পুষ্করিণীর উত্তর পাড়ে ২টা সুদৃশু শিবলিঙ্গ স্থাপন করিয়া গিয়াছেন। মন্দিরে দ্বারদেশের উপরে একখানি কৃষ্ণপ্রস্তরে উৎকীর্ণ একটী শ্লোকে জানা যায়, ১৬১২ শকাব্দের বৈশাখ মাসে মহাষ্টমী তিথিতে মঙ্গলবারে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল । শ্লোকটী এই— “শাকে পক্ষৈকষট চন্দ্রে মহাষ্ট্রম্যাং মেষে কুজে । অকারি রামরায়েণ প্রাসাদস্তাপণং শিবে ॥” উক্ত রামসাগর পুষ্করিণীর ঘাটের পশ্চিম পাশ্বের ভিত্তিগাত্রসংলগ্ন একখানি প্রস্তরফলকে উক্ত পুষ্করিণী-প্রতিষ্ঠার শকাব্দাদি লিখিত রহিয়াছে। জলমগ্ন থাকায় তাহ পাঠের সুবিধা হয় না । সন ১৮৮৫ সালের মে মাসে ঘাটের জল শুষ্ক হওয়ায় একবার তাহ পাঠ করা হইয়াছিল। কিন্তু তাহ স্মরণ নাই। তবে শিবমন্দির প্রতিষ্ঠার কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে পুষ্করিণীপ্রতিষ্ঠা হইয়াছিল এইটুকু মাত্র স্মরণ রহিয়াছে। এই রামসাগর একটা সুদৃশু পুষ্করিণী, পরিমাণ ৫০ বিঘা। উচ্চ পাহাড় ও গভীর কৃষ্ণবর্ণ জল দর্শকের চিত্ত আকর্ষণ করে। এইটা রাম রায়ের বাড়ীর দক্ষিণপূৰ্ব্ব পাশ্বে। আর একটী পুষ্করিণী বাড়ীর কিছু পশ্চিমে, পরিমাণ ২৫/ বিঘ, নাম রায়দীঘী । তৃতীয় পুষ্করিণীট বাড়ীর ঈশানকোণে, পরিমাণ ১২০ বিঘ, নাম চৌধুরী পুষ্করিণী । পরিমাণের তারতম্যমুসারে উক্ত তিনটী পুষ্করিণী যথাক্রমে সাগর, দীঘী ও পুষ্করিণী আখ্যা পাইয়াছে এবং তাহাদের নামের আদি শব্দগুলি যোজনা করিলে একটা সম্পূর্ণ নাম ‘রাম রায় চৌধুরী’ পাওয়া যায়। যাহাতে লোকে প্রত্যহুই তাহার সম্পূর্ণ নামটী উচ্চারণ করে তিনি তজ্জন্ত এই অদ্ভুত উপায় অবলম্বন করিয়াছিলেন। রাজ রামরায় চৌধুরীর অপর কীৰ্ত্তি নদীর স্রোত পরিবর্তন। ত্রিপূত নদীর জল সতীঘাট নদী দিয়া প্রবাহিত হইয়া মেহগ্রাম, কুড়মগ্রাম প্রভৃতি গ্রামের উত্তর পাশ্বস্থ বহু গ্রামের শস্ত্যহানি করিত । রাজ রামরায় একটা প্রশস্ত খাল কাটিয়া ত্রিপূত ও ব্রহ্মাণী নদী একত্র করিয়া দিয়াছিলেন, তাহাতে ব্ৰহ্মাণী নদীর বিস্তার কিছু প্রশস্ত হইয়াছিল। উক্ত নদী জগধরী, আলতড়ি, ধামতড়ি প্রভৃতি গ্রামের পাশ্ব দিয়া প্রবাহির্ত হইয়া তথাকার জলকষ্ট নিবারণ করিয়া দেয় । তন্ত্রালোচনায় প্রবৃত্ত হওয়ায় তাহার যজ্ঞাদির প্রতুি বিশেষ আস্থা হইয়াছিল। তাহার বাড়ীর দক্ষিণপার্শ্বে জগডাঙ্গা নামে একটী উচ্চভূমি ও তন্মধ্যে একটী ক্ষুদ্র জলাশয়ের মত নিম্নভূমি রহিয়াছে। উক্ত নিম্নভূমির চতুঃপার্থ ইষ্টকমণ্ডিত। সাধারণ লোকে বলিয়া থাকুে, উক্ত স্থানে ধনরত্ন প্রোথিত করিয়া একটা ব্রাহ্মণ বালককে সজীব অবস্থায় সমাধি দেওয়া হয়। যক্ষের উদ্দেশ্যে এইরূপ অর্থ উৎসর্গ করা হইয়াছিল বলিয়া স্থানট জগডাঙ্গা নামে খ্যাত। কিন্তু এই প্রবাদ বিশ্বাসযোগ্য নছে। .প্রকৃত ব্যাপার এই যে রামরায় উক্ত স্থানে একটা যজ্ঞ করিয়াছিলেন। বহু ব্রাহ্মণ দীর্ঘকাল ধরিয়া ঐ স্থানে যজ্ঞকুণ্ডে আহুতি