পাতা:বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (কায়স্থ কাণ্ড, ষষ্ঠাংশ, দক্ষিণরাঢ়ীয় কায়স্থ কাণ্ড, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন কুলস্থান ] দক্ষিণৱালীক্স কায়স্থ কাণ্ড 영어 বহিত । বর্তমান বিক্রমপুরের পশ্চিমে একটা প্রকাও মাঠ আছে, উহার নাম “ণ্ডিতের মাঠ”। এখানে "জিতের পুষ্করিণী” নামে একটা স্বপ্রাচীন ও বৃহৎ পুষ্করিণী রহিয়াছে। প্রবাদ —উক্ত •জিতের মাঠ" বহুপূৰ্ব্বে সহর ছিল । পুষ্করিণীর নিকটবর্তী স্থানে মৃত্তিকামধ্যে এখনও লোকাবাসের যথেষ্ট নিদর্শন পাওয়া যায়। এখানে অল্প মাটী খুড়িলেই বহু পুরাতন লৌহমল এবং ভগ্ন মৃৎপাত্রাদি কুমারের সাজ পাওয়া যায়। এই স্থান দেখিলেই মনে হইবে যে, বিলুপ্ত সহরের পূর্ব দিয়া এক সময়ে ভাগীরথী প্রবাহিত ছিলেন। সম্ভবতঃ এই স্থানের প্রাচীন কীৰ্ত্তিরাজির সমস্তই ভাগীরথীর তরঙ্গে বিলুপ্ত হইয়াছে। বিক্রমপুর ও দেবগ্রাম পূৰ্ব্বে বৰ্দ্ধমান জেলার কাটোয়। মহকুমার মধ্যে ছিল । এই বিক্রমপুরের ৩ ক্রোশ উত্তরে অগ্রদ্বীপ। বৰ্দ্ধমানের নূতন গেজেটীয়ারে লিখিত আছে, উজনি হইতে রাজা বিক্রমাদিত্য প্রত্যহ অগ্রদ্বীপে গঙ্গাস্নান করিতে আসিতেন। বিক্রমপুর ও দেবগ্রামের প্রাচীন ভূসংস্থান ও ভাগীরথীর গতি হইতে বেশ মনে হইবে, বৰ্বমান অগ্রদ্বীপের মত এই উভয় স্থান ভাগীরথীর পশ্চিমে অর্থাৎ রাঢ়দেশেই ছিল । প্রৰদি অনুসারে উপানি মঙ্গলকোটে বক্রমকেশরী বা বিক্রমাদিত্যের রাজধানী ছিল। বিক্রমপুর হইতে মঙ্গলকোট পর্য্যন্ত প্রায় ১২ ক্রোশ ভূভাগ বিক্রম নামক নৃপতির শাসনাধীন থাকা কিছু ধি চত্র নয়। সম্ভবতঃ রাজা বিজয়সেনের নিকট পরাজিত হইয়া বিক্রমরাজ উজনি মঙ্গলকোটে গিয়া বাস করিয়াছিলেন। তাহাকে পরাজয় করিয়ী রাজা বিজয়সেন এখানে রাজধানী করিয়াছিলেন । বিজয়ুসেন, বল্লালসেন ও লক্ষ্মণসেন এই ৩ জন নৃপতির সময়ে বিক্রমপুর সেনরাজধামীরূপে গণ্য ছিল। মহম্মদ-ই-বক্তিয়ার খিলিঙ্গী নদী। জয়ের পর বিক্রমপুরও আক্রমণ করিয়াছিল এৰং সেখানকার সমস্ত প্রাচীন কীৰ্ত্তি নষ্ট করিয়া ফেলে। বাঙ্গলার প্রায় সৰ্ব্বত্রই পূর্বে যে যে স্থানে হিন্দুরাজগণের রাজধানী ছিল, আজকাল সেই সকল স্থানেই অধিকাংশ মুসলমানের বাস দেখা যায়। বৰ্ত্তমান বিক্রমপুর গ্রাম বা মোঙ্গায় হিন্দুর বাস বেশ নাই, শতকরা ৯০ জন মুসলমান। মুসলমানেরা এখানকার প্রাচীন হিন্দুকীৰ্ত্তিও সমস্ত নষ্ট করিয়াছে। প্রাচীন বিশালাক্ষীদেবী এখনও এখানে বিরাজ করতেছেন। অধুন। এই বিশালাক্ষী দেবীর খ্যাতি ও প্রতিপত্তির কথা অনেকের অপরি. জ্ঞাত ইহলেও এক সময়ে তাহার মহাত্ম্য যে পূর্ববঙ্গেও প্রচলিত ছিল । পূৰ্ব্ববঙ্গবাসী পুরাতন কবি কবিশেখর বলরাম চক্ৰবৰ্ত্তী “কালিকামঙ্গল” বা বিদ্যামুন্দর গ্রন্থে রাঢ়দেশের বিভিন্নস্থানের প্রসিদ্ধ দেবীমূৰ্ত্তিগুলির প্রসঙ্গে বিক্রমপুরের "বিশালাক্ষীদেবীর’ বন্দনা করিয়াছেন /* এখন সাধারণে এই বিক্রমপুরের পূর্বপরিচয় বিশ্বত হইয়া পূৰ্ব্ববঙ্গের বিক্রমপুরে সেনবংশের সম্বন্ধ কল্পনা করিয়া থাকেন। (১৮) সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা, সন ১৩৬৬ সাল ৫৬ পৃষ্ঠা এষ্ট্য।