পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰয়াগ । qፃ রামচন্দ্রের পদব্রজে এই আশ্রয়ভূমি পবিত্রতর হইয়াছিল। প্ৰয়াগের নানাস্থানে বহু প্ৰাচীন দেবালয় ও ঋষ্যাশ্রমের নিদর্শন পাওয়া যায়। ইহার দক্ষিণাংশে মহামুনি অত্রির আশ্রম ছিল। তঁহার এবং তৎপত্নী অসূয়া দেবীর নামে এই স্থানের নাম হয়—“অত্ৰি অসুয়াশ্রম”। ইহা ক্ৰমে উচ্চারণ বিকারে 'ख्रद्धाश्ॉ'भ পরিণত হয় এবং সমগ্র পল্লীটীর নাম হয় “আন্তরসুইয়া”। এখানেও বহুবর্ষ পূৰ্ব্ব । হইতে বাঙ্গালীদিগের একটি উপনিবেশ স্থাপিত হয়। এলাহাবাদের চতুদিকে পল্লীগুলি অনেকটা বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থিত। ইহার উত্তর ও দক্ষিণের পল্লী-মধ্যে প্ৰায় একক্রোশ ব্যবধান ; পূৰ্ব্বভাগে প্ৰাচীন বসতি গঙ্গাতীরবত্তী দ্বারাগঞ্জ এবং যমুনাকূলবৰ্ত্তী কীডগঞ্জ ( ('ol, Kydld এর নামে এই পল্লীর নামকরণ হয় ) ; পশ্চিমাংশ সাহেব পল্লী, সিভিল লাইনস বলিয়া প্ৰসিদ্ধ। এই অংশে আদালত, অফিস, প্রভৃতি অবস্থিত। উত্তর ও দক্ষিণের যে বিস্তীর্ণ ব্যবধান আছে, তন্মধ্যে প্রায় ৪০০ বিঘা বিস্তৃত এলফ্রেড পার্ক নামক উদ্যান, পাবলিক লাইব্রেরী, মিওর সেণ্ট ল কলেজ, হিন্দু-বোর্ডিং, ইউনিভার্সিটি-হল, মধ্যে মধ্যে সাহেব, হিন্দুস্থানী ও বাঙ্গালীদের প্রাসাদতুল্য উদ্যান-সংলগ্ন অট্টালিকা, হিন্দু-বঙ্গ-বিদ্যালয়, কায়স্থ পাঠশালা নামক স্কুল ও কলেজ স্থাপিত। যুক্তপ্রদেশের রাজধানী হইলেও এলাহাবাদ লোক সংখ্যায় চতুর্থ স্থান অধিকার করে,-বারাণসী, লক্ষ্মৌ, আগ্রা এবং কানপুর, রাজধানী অপেক্ষা জনবহুল। এখানে অন্যান্য প্রদেশ হইতে যাহারা আসিয়া উপনিবিষ্ট হইয়াছেন তন্মধ্যে বাঙ্গালীর সংখ্যাই অধিক ; তঁাহারা সহরের সকল দিকেই বসতি স্থাপন করিয়াছেন । গঙ্গা এবং যমুনা যথায় লুপ্ত সরস্বতীর সহিত মিলিত হইয়াছে সেই স্থানের নাম ত্ৰিবেণী সঙ্গম । ইহাই যুক্তবেণী । এই সঙ্গম স্থলে গঙ্গার রজতক্ৰোড়ে যমুনার কাল জল আসিয়া মিলিতেছে। যমুনা যেন জাহ্নবীতে আত্মসমৰ্পণ করিতে আসিয়া আত্মহারা হইয়া যাইতেছেন, আর তীর্থরাজ যেন অনন্তকাল ধরিয়া সেই গঙ্গা-যমুনার রাসলীলা দেখিতে দেখিতে বিভোর হইয়া দাঁড়াইয়া আছেন! প্ৰয়াগ যে কেবল বৈদিক এবং পৌরাণিক আৰ্যজাতিরই চিত্তহরণ করিয়া হিন্দুর প্রধান তীর্থে পরিণত হইয়া আছে তাঁহাই নহে, বৌদ্ধযুগে ইহা বৌদ্ধগণেরও পবিত্র তীর্থ মধ্যে পরিগণিত হইয়াছিল, ভগবান বুদ্ধদেব এখানে।