পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wシ বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী দিতেন। তাহার এই সকল অনন্যসাধারণ গুণাবলীর জন্য তিনি কি দেশবাসী কি ইংরেজ রাজপুরুষ সকলের নিকটই সমাদৃত ছিলেন। যুক্ত প্রদেশের প্রায় সৰ্ব্বত্রই শিক্ষা ও চিকিৎসা এবং রেল ও গবর্ণমেণ্ট দপ্তরের চাকরীর পরই ঔষধালয় স্থাপন বাঙ্গালীর একচেটিয়া ব্যবসায় ছিল। এখনও যে এককালে নাই তাহা নহে। এলাহাবাদের অধিকাংশ ঔষধালয় এবং চিকিৎসকই বাঙ্গালী। এখানে বাঙ্গালী প্রবাসের প্রথমাবস্থায় ঈশানবাবুর একটীি ঔষধালয় ও তৎসঙ্গে একটা মনিহারীর দোকান ছিল। তাহার অফিসে তিনশত টাকা বেতন, বিবিধ সওদাগরী অফিসের হিসাব-পরীক্ষার পারিশ্রমিকস্বরূপ মধ্যে মধ্যে ৪৫ শত টাকা উপাৰ্জন এবং কণ্টাক্টরীর কৰ্ম্ম ব্যতীত এই ঔষধালয় হইতে বিলক্ষণ আয় ছিল। তিনি প্রচুর অর্থ উপাৰ্জন করিয়া ছিলেন বটে, কিন্তু স্বভাবসিদ্ধ মুক্তহস্ততা, দরিদ্রসেবা, আশ্রিতপালন ও পরহিতৈষণা প্রভৃতি গুণের জন্য কাৰ্পণ্যদোষ তাহাতে আশ্রয় করে নাই। এই সকল কারণে তিনি প্ৰয়াগে কয়েকখানি মাত্ৰ অট্টালিকা ব্যতীত উপাৰ্জনের অনুরূপ ঐশ্বৰ্য্য রাখিয়া যাইতে পারেন নাই। এলাহাবাদে তাহার আসিবার তিন বৎসর পরে সিপাহীবিদ্রোহ হয় । তখন তিনি সাদারল্যাণ্ড সাহেব কর্তৃক এলাহাবাদ দুৰ্গমধ্যে সুরক্ষিত হন। এই সময় র্তাহার বন্ধু স্বৰ্গীয় নীলকমল মিত্ৰ মহাশয় প্রমুখ কতিপয় বিশিষ্ট বাঙ্গালীও দুৰ্গে আশ্ৰয় লাভ করেন। একমাসকাল তঁহাকে দুর্গ মধ্যে থাকিতে হইয়াছিল। স্বৰ্গীয় রজনীকান্ত গুপ্ত মহাশয় তখনকার প্রয়াগ-প্রবাসী বাঙ্গালীদিগের অবস্থা সম্বন্ধে তীহার সিপাহী যুদ্ধের ইতিহাসে লিখিয়াছেন “উত্তেজিত লোকে কেবল ইউরোপীয় ও ফিরিঙ্গীদিগের বিরুদ্ধে অভু্যথিত হয় নাই। এলাহাবাদের অনেক বাঙ্গালী শান্তভাবে কালাতিপাত করিতেছিলেন, পবিত্র প্রয়াগে, পবিত্র গঙ্গাযমুনার সঙ্গমস্থলে বাস করিয়া হঁহারা পুণ্যসঞ্চয় ও শারীরিক স্বাস্থ্যসাধনের আশা করিতেছিলেন। দূরাগত অনেক বাঙ্গালীও স্রোতস্বতীসঙ্গমে অবগাহন করিবার জন্য এই স্থানে আসিয়াছিলেন। উত্তেজিত । জনসাধারণের সহিত ইহাদের কোনরূপ সমবেদন ছিল না । কোম্পানির রাজ্য বিনাশার্থেও ইহার কাহারও পরামর্শে পরিচালিত হইতেন না । ইহার নিরীহভাবে আপনাদের কাৰ্য্যে ব্যাপৃত থাকিতেন এবং কোম্পানির অধিকারে আপনাদের