পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳԽ বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী দিয়া সন্ন্যাসীকে গুপ্তধন সমর্পণ করিতে বলে। রাসবিহারী বাবু তাহাদেৱ ভাবগতিক দেখিয়া সে স্থান হইতে তখন সরিয়া পড়েন। দস্যগণ গুপ্তধনের আশায় সন্ন্যাসীর হােত পা বাধিয়া চিমটা গরম করিয়া দেহের স্থানে স্থানে । ছোক দেয় এবং সেই অবস্থায় ফেলিয়া রাখিয়া রাসবিহারীবাবুকে খুজিতে থাকে, ও তঁহাকে না পাইয়া গুপ্তধনের জন্য আশ্রমের চতুর্দিক খুড়িয়া দেখিয়া প্ৰস্থান করে। পরে রাসবিহারী বাবু তাহার গুপ্তস্থান হইতে বাহির হইয়া সন্ন্যাসীর বন্ধনমোচন করেন এবং উভয়ে সে স্থান হইতে বিভিন্নপথে পলায়ন করেন। রাসবিহারী বাবু রোহতক প্রবাসী জন্মেজয় ঘোষ নামে তঁহার পূর্ব পরিচিত জনৈক বাঙ্গালীর বাটীতে গিয়া উপস্থিত হন। তথায় দেখেন সে বাটীও ইতিপূৰ্ব্বে দস্যগণ কর্তৃক লুষ্ঠিত হইয়াঁছে। গৃহস্থাদিগের জন্য তাহারা একখানি পরিধানের বস্ত্র অথবা এক গ্ৰাস অন্নও রাখিয়া যায় নাই। এই স্থানে কয়েকদিন থাকিবার পর একদা রাসবিহারী বাবু সন্ধ্যাকালে ফিরিতেছেন এমন সময় দেখিলেন কয়েকজন লোক খাটিয়ায় করিয়া কাহাকে লইয়া জন্মেজয় বাবুর বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিল। রাসবিহারী বাবু একটু অন্তরালে থাকিয়া ব্যাপার কি দেখিতে লাগিলেন। লোকগুলা জন্মেজয় বাবুকে বলিল “আমরা আপনার পুত্রকে পল্টনের বাবু মনে করিয়া মারিয়াছি।” এই বলিয়া তাহারা চলিয়া গেলে রাসবিহারী বাবু আহতের নিকট আসিয়া দেখিলেন। তঁহার আশ্রয়দাতার পুত্ৰ কালী বাবু । তঁহার সর্বাঙ্গ অস্ত্রাঘাতে রুধিরাক্ত ; কিন্তু দেহে তখনও প্ৰাণ আছে। বিশেষ শুশ্রুষায় তিন দিন পরে কালীবাবুর চৈতন্য হইল। কালীবাবু সে যাত্রা জীবন পাইয়াছিলেন। অন্য এক দিবস রাসবিহারী বাবু পথে বাহির হইয়াছেন, এমন সময় দুইটি গুলি তাহার কাণের কাছ দিয়া শন শন শব্দে চলিয়া গেল। সে যাত্রাও তিনি রক্ষা পাইলেন। রোহতকের সকলের নিকটই তিনি পরিচিত ছিলেন। পণ্টনের বড় বাবু বলিয়া সকলেই তাঁহাকে মান্য করিত। তিনি প্রচুর ধন উপাৰ্জন করিয়াছেন, তাহার উপর তিনি ইংরেজ গবৰ্ণমেণ্টের বিশেষ পক্ষপাতী ও সাহেবদিগের বিশ্বাসভাজন ; সুতরাং কি বিদ্রোহীদল কি দসু্যাগণ সকলেরই দৃষ্টি তীহার উপর পতিত হইয়াছিল। অতঃপর সহরে থাকা বিপজ্জনক দেখিয়া তিনি একটী গ্রামের মধ্যে আশ্রয় লাইলেন । এখানে তাঁহার সন্ন্যাসীর বেশ, সৌম্যমূৰ্ত্তি, সুকণ্ঠ, নিপুণ সেতারবাদন,