পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sly. বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । থাকিবে; বাড়ীতে থাকা হইবে না”; এই বলিয়া ক্রোড়ে করিয়া বিদ্যালয়ে রাখিয়া । আসিতেন। কতবার লুইস সাহেব অসুস্থ দেখিয়া জেদ করিয়া গৃহে ফিরাইয়া। দিয়াছেন। বালক মাধবদাস পাঠে বিশেষ মনোযোগী ছিলেন না বটে। কিন্তু তিনি এরূপ মেধাবী ছিলেন যে একবার যাহা পাঠ করিতেন তাহা তৎক্ষণাৎ কণ্ঠস্থ হইয়া যাইত। লুইস সাহেব তঁহাকে বড় ভাল বাসিতেন। তিনি বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ছাত্র ছিলেন। আবদুল্লা নামে একজন মুসলমান ছাত্র সৰ্ব্বপ্রধান বলিয়া খ্যাত ছিলেন। একবার উভয়ে বিবাদ হয়। গালির জন্য তিনি গুরুমহাশয়ের পাঠশালা ত্যাগ করেন এবং গালি দেওয়াতেই আবার আবদুল্লার সহিত বিবাদ বাধে। আবদুল্লাকে তিনি জুতা প্ৰহার করেন। লুইস সাহেব এ সমস্তই গোপনে দেখিয়াছিলেন । এই ব্যাপার সাহেবের গোচর হইলে আবদুল্লা বাবাজীর নামে অনেক মিথ্যা দোষারোপ করে কিন্তু বালক মাধব দাসকে জিজ্ঞাসা করায় তিনি আমূল সমস্ত যথাযথ বর্ণন করিলেন; আত্মদোষ স্বীকার করিতেও কুষ্ঠিত হইলেন না। র্তাহার এই নৈতিক বলের পরিচয় পাইয়া লুইস সাহেব তীহাকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করিতেন এবং কোন ঘটনার সত্যাসত্য নিৰ্দ্ধারণ করিতে হইলে তঁহাকেই জিজ্ঞাসা করিতেন ; সত্য কথা বলিতে তিনি ভীত হইতেন না । ভয় বা প্ৰলোভনের বশে কখন তিনি মিথ্যা আচরণ করিতেন না । সত্যনিষ্ঠ তাহার মজ্জাগত ছিল । সত্যের অপলাপ দেখিলেই তিনি অগ্নিশৰ্ম্ম হইয়া উঠিতেন। র্তাহার জীবনে তাহার অনেক দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। একবার বিনাকারণে লুইস সাহেব তাহাকে তিরস্কার করেন। তাহাতে কয়েক বৎসর তিনি সাহেবের প্রতি চাহিয়া দেখেন নাই। তঁহার নিকট অধ্যয়ন করিতেন, তাহার প্রশ্নের উত্তর দিতেন, কিন্তু সদাসৰ্ব্বদা মুখের উপর একখানি পুস্তক আড়াল দিয়া রাখিতেন। আর একবার তাহার জ্বর হওয়ায় পাঠ তৈয়ার করিতে পারেন নাই। লুইস সাহেব সে কথা বিশ্বাস না করিয়া তাহাকে সামান্য । প্রহার করেন। ইহাতে বালক মাধব দাস এতই বিরক্ত হন যে সেই কারণে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন এবং গরুর গাড়ী করিয়া (তখন রেল হয় নাই) একাকী এলাহাবাদ হইতে কাশী যান। সেখানে কাশীর গভর্ণমেণ্ট স্কুলে ভৰ্ত্তি হইয়া স্বীয় শ্রেণীর। সর্বপ্রধান স্থান অধিকার করেন। ইহাই শেষে তাহার কাশীবাসের প্রতিবন্ধক হয়। এখানে তঁহাকে স্বহস্তে রাধিয়া খাইতে হইত এরং অতি কষ্টে অন্তের