পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৪২৩

অযোধা প্ৰদেশ । WORGł লোক এখানে আছি, ইতিপূৰ্ব্বে যাহা কিছু ছিল লুষ্ঠিত হইয়া গিয়াছে। এক্ষণে বাসন ও আহারীয় মাত্ৰ পড়িয়া আছে।” সিপাহীর ভয়ানক ভয় দেখাইল ও কটুক্তি করিতে লাগিল। কিন্তু কালীবাবু ধীর ও নম্রভাবে তাহাদের বুঝাইতে লাগিলেন। হঠাৎ তথায় তঁহার এক প্রতিবেশী “রঙ্গসাজ” (রঙ্গ ব্যবসায়ী) আসিয়া পড়িল। কালীবাবু তৎক্ষণাৎ তাহাকে ব্যস্ত হইয়া বলিলেন “তুমি ত জান সব লুঠ হইয়া গিয়াছে, এখন আর দিবার মতন কিছুই নাই ? সে কোথায় তাহার সমর্থন করিবে, না, সেও দলে মিশিয়া গেল এবং ভয় দেখাইতে লাগিল। জীবন আর নিরাপদ নয় দেখিয়া রঙ্গসাজকে দ্বারে রাখিয়া তিনি ভিতরে গেলেন । আমনি দেখেন প্রাঙ্গণে একটি অঙ্গুরী ও তিনটি টাকা পড়িয়া রহিয়াছে। তিনি জগদীশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়া সে দুটা উঠাইয়া লইলেন ! পথ খরচের সংস্থান হইয়া গেল। কালীবাবুজীৰ্ণ মলিনবাস পরিধান করিয়া বাটির খিড়কিদ্বার দিয়া বাতির হইয়া গেলেন। তীরন্দাজ রক্ষিগণ প্রভুর অবস্থা দেখিয়া অশ্রুপাত করিতে লাগিল। যে মন্দিরে পণ্ডিত ইন্দ্রনারায়ণ আশ্রয় লইয়াছিলেন তিনি ও তথায় প্রবেশ করিলেন । কনিষ্ঠ তারিণী বাবু নগর ত্যাগ করিয়া গেলেন। তিনি কাণপুরের পথ ধরিলেন। কিন্তু কিয়ৎদূর গিয়াই ক্লান্ত ও চলৎশক্তি রহিত হইয়া পড়িলেন। র্তাহার পদযুগল ফুলিয়া উঠিল এবং এক স্থান ফাটিয়া রক্ত পড়িতে লাগিল। তিনি অগত্য পথিপাথে এক দেবালয়ে প্ৰবেশ করিলেন। সৌভাগ্যক্রমে এক জমীদার সেই পথ দিয়া যাইতে যাইতে তঁহাকে দেখিতে পাইলেন। তিনি কালীচরণ বাবুর পুরাতন বন্ধু। র্তাহার বাড়ী কুমায়ু। তিনি তারিণী বাবুর নিকট সমস্ত অবগত। হইয়া তাহাকে যত্নপূর্বক আপনার গৃহে লইয়া গেলেন এবং তারিণী বাবুকে জনৈক প্ৰজার জিম্বায় রাখিয়া প্ৰকাশ্যভাবে ঘোষণা করিয়া দিলেন যে দেবসেবার জন্য একজন নূতন পূজারী আসিয়াছেন। এইরূপে তারিণী বাবু আশ্রয়প্রাপ্ত হইলেন। তাহার জ্যেষ্ঠ শ্যামাচরণ বাবু সাধুর বেশ ধরিয়া থাকিলে জীবন নিরাপদ দেখিয়া জনৈক ব্ৰহ্মচারীর সহিত বাস করিতে লাগিলেন । বিদ্রোহিগণ র্তাহার মস্তকের জন্য ২৬২ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করিয়া দিল। সুতরাং লক্ষ্মেীয়ে থাকা আর উচিত নয় দেখিয়া তিনি উহা ত্যাগ করিয়া বৈশওয়ার জেলায় তুলসীরাম মিশ্রের বাড়ী লুকাইয়া রছিলেন। এদিকে কালীবাবুকে সন্ধান করিবার জন্য র্তাহার বিশ্বাসী ভৃত্যগণ চতুর্দিকে দৌড়িল। র্তাহাদের মধ্যে একজন রামসহায়,