পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৪২৬

VQby বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । আগুলিয়া বেড়াইত ; এমন কি পোকা মাকড়ট পৰ্যন্ত র্তাহার নিকট থাকিতে দিত। না। সে যাহা কিছু ভুক্তাবিশিষ্ট পাইত তাহাতেই সন্তুষ্ট হইয়া কালীবাবুর নিকট পড়িয়া থাকিত। এই অনাহুত জন্তুটি কালীবাবুর নির্জনবাসের প্রধান সহায় হইয়াছিল। ক্ৰমে বর্ষা নামিল। পথঘাট জলাকীর্ণ ও বিপদসঙ্কুল হইয়া উঠিল; এদিকে সেই ভয়ানক স্থানে আর অধিককাল বাস করা যুক্তিসিদ্ধ মনে করিলেন না । অতঃপর এক দিন সন্ধ্যায় পরিবারবর্গকে দেখিতে গেলেন। এখানে দেখেন তঁহাদের বিপদের এক শেষ। শ্যামাচরণ বাবুর স্ত্রী এক সন্তান প্রসব করিয়াছেন। যাহার বাড়ীতে র্তাহারা আছেন সেই গোবিন্দপ্ৰসাদ আব্বস্তীর পিতার বিসুচিকায় দেহত্যাগ হইয়াছে। কলেরা ও বাত সংক্ৰামক আকার ধারণ করিয়াছে। আব্বস্তীজীর বৃদ্ধ জননী, কালীবাবুর পরিবারেরা আসাতেই তাহার পুত্রের মৃত্যু হইল বলিয়া গোল বাধাইলেন এবং আরও বিপদের আশঙ্কা করিয়া শীঘ্ৰ স্থানান্তরে যাইবার জন্য পীড়াপীড়ি করিতে লাগিলেন । বুদ্ধা। কিন্তু এক পক্ষকাল পরে বিসুচিকায় প্ৰাণ হারাইলেন। গোবিন্দ প্ৰসাদের মন কুসংস্কারাচ্ছন্ন ছিল। কালী বাবু তাঁহাকে অনেক বুঝাইলেন, কিন্তু তাহার ধারণা দূর হইল না। কালীবাবুর জ্যেষ্ঠা কন্যা এবং তারিণী বাবুর এক কন্যা ঐ রোগে মৃত্যুমুখে পতিত হইলেন। কালী বাবুর পরিবারের মধ্যে কোন স্ত্রীলোক স্বপ্ন দেখিলেন সেই বৃদ্ধ বলিতেছেন “এখনও তোমরা বাড়ী ছাড়িবে কি না ? না ছাড়িলে যাহারা আছে তাহাদের সকলকে লইব ।” বাড়ী ছাড়াই শেষে স্থির হইল। এবং ভ্রাতৃগণের সন্ধান লওয়া হইল। যখন প্রথমে বিদ্রোহ দেখা দেয় কালী বাবু তাহার দুইজন বিশ্বাসী ভূত্য ( পুরী ও দীক্ষিতজীকে ) এলাহাবাদে পিতার নিকট পাঠান। তাহাদের সঙ্গে একটী বংশদণ্ড দেন তন্মধ্যে ১০০২ টাকার হওঁী ছিল। ভৃত্যদ্বয় এলাহাবাদের নিকট পৌছিয়া দেখিল নদীর উভয় তীর ইংরেজ কর্তৃক সুরক্ষিত । কাহার ও গমনাগমনের হুকুম নাই। তাহারা অগত্য। লক্ষ্মেী ফিরিয়া আসিল ; কিন্তু পূৰ্ব্ব বাসস্থানে তাহদের প্রভুর সাক্ষাৎ না পাইয়া নিরাশ হইয়া পড়িল । কারণ কালী বাবু তখন আবিস্তীজীর বাড়ীর নিকটস্থ উদ্যানে উঠিয়া গিয়াছিলেন। বহু অন্বেষণের পর তঁাহার দেখা পাইয়া সমস্ত নিবেদন করিল। দীক্ষিতজী তৎপরে শুষ্ঠােমাচরণ বাবুর সন্ধানে প্রেরিত হইল। দৈবযোগে শ্যামাচরণ বাবু তুলসী রাম বাড়ী হইতে চলিয়া আসিয়া কালী বাবু যে উদ্যানে ছিলেন তাহারই এক