পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৪২৮

Ꮤ9ᏭᏬe বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । সময় জনৈক জমীদার সংবাদ আনিল যে “নাজিম” সৈন্যসহ অদূরে অবস্থান করিতেছেন। নাজিমের নাম শুনিয়া ডুলিবাহকগণ ডুলি ফেলিয়া পলায়ন করিল। কালী বাবু পথিমধ্যে মহা বিপদে পড়িলেন। অবশেষে অনতিদূরে পাণ্ডেশ্বর মহাদেবের মন্দিরের গোসাইজীর সহিত পরামর্শ করিয়া মন্দিরের পাশ্ববৰ্ত্তী একটী । বাড়ীতে সে রাত্রি কাটাইলেন। কিন্তু সেখানেও নিরাপদ হইতে পারিলেন না । একজন যোগী (স্থানীয় পাণ্ড ) দুই জন চেলার সঙ্গে তথায় আসিয়া উপস্থিত হইল। যোগীর হস্তে তরবারি ছিল এবং সে নেশায় উন্মত্তবৎ হইয়াছিল। একজন পণ্ডিত কালী বাবুকে চিনিতে পারিয়াছিল। সে সংস্কৃতভাষায় পাণ্ডাকে তঁহার গুপ্তকাহিনী সমস্ত বলিয়া দিল । • তাহার মস্তকের জন্য যে পাচ হাজার টাকা প্রভৃতি পুরস্কার ঘোষণা করা হইয়াছিল সে তাহা জানিত। কালীবাবু গোঁসাইজীকে এ সকল কথা বলিয়া দিলেন। অতঃপর গোসাইজী চারি জন সশস্ত্ৰ ভীমকায় সেনা তঁহাকে রক্ষা করিবার জন্য পাঠাইয়া দিলেন। গভীর রাত্রে দুৰ্ব্বত্ত পাপীর দল কয়েকবার আসিয়া দ্বারে আঘাত করিয়াছিল। কিন্তু কৌশল ক্ৰমে এবং সারা রাত্রি জগদীশ্বরের নাম জপ করিতে করিতে সে রাত্ৰি কাটিয়া গেল। প্ৰাতে র্তাহার জমীদার বন্ধু , কয়েকখানা ডুলি লইয়া আসিলে তিনি রওনা হইলেন, এবং কয়েক মাইল আসিবার পর এলাহাবাদ দুর্গে ব্রিটিশ পতাকা দেখিতে পাইলেন। তথা হইতে এলাহাবাদের মধ্যবৰ্ত্তী স্থানে একটি সহরের ধারে কয়েকজন দসু্য লুকাইয়া ছিল। ঐ সকল দসু্যদিগের গুপ্তস্থান বলিয়া প্ৰসিদ্ধ ছিল। কিন্তু সে যাত্ৰা কালীবাবু তাহার জমীদারবন্ধুর জন্য রক্ষা পাইলেন। জমীদারকে তাহারা বিলক্ষণ চিনিত । তঁহাকে দেখিয়াই তাহারা পলায়ন করিল। অবশেষে সকলে এলাহাবাদে আসিয়া পৌঁছিলেন। কালী বাবু জমীদারকে মিষ্টান্ন ও কিছু অর্থ এবং ভূর ভূরি। ধন্যবাদ দিয়া বিদায় করিলেন। এখানে বলা যাইতে পারে যে, এই সকল জমীদার নামধারী কৃষকসর্দার বিলক্ষণ ক্ষমতাপন্ন এবং সাহসী । ইহাদের অর্থ এবং লোকবল যথেষ্ট কিন্তু ইহাদের কথাবাৰ্ত্তা এবং বেশভূষা দেখিলে আমাদের দেশীয় জমীদারবর্গের দ্বারবান শ্রেণীর লোক বলিয়াই মনে হয়। গৃহে পৌঁছিয়া সকলে যেন পুনৰ্জ্জীবন লাভ করিলেন। কালীবাবুর বৃদ্ধ পিতা । পরমানন্দে, পুত্রকে আলিঙ্গন করিলেন। গৃহে পুনরায় শান্তি স্থাপিত হইল। এলাহাবাদ তখন সম্পূর্ণ নিরাপদ হইয়াছিল। ইংরেজ সৈন্য চতুর্দিকেই জয়ের