পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৪৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ტ8\ტ বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । যুরোপীয় ডাক্তার পাঠাইতে বলেন। কিন্তু পামার সাহেব ডাক্তার সূৰ্য্যকুমারকে উপযুক্ত বুঝিয়া ব্রিগেড সার্জন স্বরূপ পাঠাইয়া দেন। একদিন যুদ্ধাবসানের পর হঠাৎ এই রেজিমেণ্ট সংক্রান্ত রসদ-বিভাগ বিদ্রোহীদিগের দ্বারা লুষ্ঠিত হয়। গুদামে এক বোতল মদ্য পৰ্যন্ত আর পড়িয়া ছিল না। সমস্তদিন পরিশ্রমের পর গোরারা একটু মন্ত না পাইয়া বড়ই দুৰ্দশাগ্ৰস্ত হইবে, সুতরাং এরূপ প্ৰস্তাব হয় যে এক্ষণে ডাক্তারখানা ( Medical Store ) হইতে মদ্য বিতরিত হউক। তখন এডজুটাণ্ট সাহেব সেনাপতিকে আদেশ জানাইয়া, সূৰ্য্যকুমার বাবুর নিকট মদ্য এবং শ্ৰান্তিনিবারক দ্রব্যাদি প্রার্থনা করিলেন। কিন্তু ডাক্তার তাহা কোন মতেই দিতে চাহিলেন না । তিনি বলিলেন সেনাপতির লিখিত আদেশ ব্যতীত তিনি চিকিৎসা বিভাগীয় মালখানা হইতে কোন সাহায্যই করিতে পরিবেন না। এডজুটাণ্ট সাহেব ডাক্তারের ব্যবহারের কথা সেনাপতিকে জ্ঞাপন করিলেন। মৌখিক আদেশ বাস্তবিকই হ্যাভলক সাহেব দিয়াছিলেন। সুতরাং তঁহার আদেশ অমান্য হইতে দেখিয়া তিনি ক্ৰোধে অধীর হইয়া উন্মুক্ত অসি। হস্তে ডাক্তারের প্রতি ধাবিত হইলেন । সৰ্ব্বাধিকারী মহাশয় যথাবিহিত, “স্যালুটি” করিয়া দাড়াইলেন। সাহেব বলিলেন “তুমি আমার আদেশ পালন করিবে: কি না ? সামরিক বিভাগে অবাধ্যতার দণ্ড কি তাহা তুমি জান ?” ডাক্তার মহাশয় অকম্পিত স্বরে উত্তর করিলেন, “জানি, দণ্ড-মৃত্যু। কিন্তু আপনার মৌখিক হুকুম পালন করিয়া আমি আপনার ‘লিখিত আদেশ’ অমান্য করিতে পারি না।” হ্যাভলক সাহেব কোর্ট মার্শালের আজ্ঞা দিলেন এবং তিনি সেই বিচারসভার প্রেসিডেন্ট হইয়া বসিলেন। বিচারস্থলে সৰ্ব্বাধিকারী মহাশয় দণ্ডায়মান হইলে সেনাপতি হাভলেক জলদগম্ভীর স্বরে ‘বলিলেন—“আমার আদেশ তুমি এডজুটাণ্টের মাফৎ শুনিয়াছিলে, কিন্তু তাহা পালন কর । নাই। অবাধ্যতার দণ্ড তোপের মুখে উড়াইয়া দেওয়া । তোমার কিছু বলিবার আছে?” সৰ্বাধিকারী মহাশয় পূর্ববৎ অবিচলিত চিত্তে বলিলেন, “আমি পূর্বেও যাহা বলিয়াছি এখনও তাহার পুনরুক্তি করিতেছি। মাত্র।” এই বলিয়া তিনি নিজের পকেট হইতে একখানি নোট বহি বাহির করিয়া বিচারপতির সমক্ষে ধরিলেন। তাহাতে হােভলক্‌ সাহেবের নিজের হাতে ডাক্তার সর্বাধিকারীকে উদ্দেশ করিয়া লেখা ছিল “সেনাপতির লিখিত আদেশ