পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৪৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অযোধ্যা প্ৰদেশ । SCId হয়। ম্যালেরিয়া দূষিত কৃষ্ণনগর ত্যাগ করিয়া তখন তিনি কলিকাতা মেডিকেল কলেজে প্ৰবেশ করিতে মনস্থ করেন। তঁহার পিতা ইহার ঘোর বিরোধী ছিলেন। কিন্তু তিনি স্বীয় প্ৰতিজ্ঞায় অটল থাকিয়া গোপনে গোপনে উদ্দেশ্য সাধনের উপায় দেখিতে লাগিলেন। তিনি যেন বুঝিয়াছিলেন। উহাই তেঁাহার ভবিষ্যৎ জীবনের মনোনীত পথ, তাহার প্রকৃত কৰ্ম্মক্ষেত্র। যখন প্রবল ইচ্ছার স্রোতে সকল প্রতিবন্ধকই ভাসিয়া যায় তখন আর কেহ আগুপাছু চায় না। একদা গভীর রাত্রে পরিবারবর্গ গাঢ়নিদ্রায় মগ্ন আছেন, এমন সময় যুবক রামলাল পাঁচ টাকা মাত্র অর্থসম্বল লইয়া নিঃশব্দে পিতার গৃহ ত্যাগ করিলেন। তঁহার নিঃস্ব অবস্থা, অল্পবয়স, ভগ্নস্বাস্ত্য, লোকচরিত্রানভিজ্ঞতা সত্ত্বেও হৃদয়ে সাহস, মনে আঠল প্ৰতিজ্ঞা এবং সম্মুখে উচ্চ আদর্শ লইয়া সম্পূর্ণ অপরিচিত স্থান কলিকাতা গিয়া উপস্থিত হইলেন। এই সূত্রে কিছুদিন পিতাপুত্ৰে মনোমালিন্য ঘটে এবং পিতার নিকট হইতে সৰ্ব্বপ্রকার সাহায্যে বঞ্চিত হইয়া কলিকাতায় দুইটি বালকের শিক্ষকতা করিয়া তাহাকে কোন প্রকারে গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যয় নির্বাহ করিতে হয় । তিনি উপাৰ্জিত অর্থের ৭টা টাকা হিন্দু হোষ্টেলে দিয়া যে একটী টাকা উদৃত্ত থাকিত তাহাতে পুস্তক ক্রয় করা অসম্ভব বলিয়া তাহাতে উপযুক্ত পরিমাণ কাগজ কিনিয়া বহু পরিশ্রমে সহপাঠীর পুস্তক হইতে নকল করিয়া আপন পুস্তকের অভাব মোচন করেন এবং অধ্যবসায়গুণে যথাসময়ে পরীক্ষায় উচ্চস্থান অধিকার করিয়া নিৰ্দ্ধারিত বৃত্তি লাভ করিতে থাকেন। পিতা। পুত্রকে দৃঢ়প্ৰতিজ্ঞ দেখিয়া ক্ৰমে ক্ৰোধ-শুন্য হইয়া প্রয়ােজনমত অর্থ সাহায্য করিয়াছিলেন। তৎপরে তিনি যথাসময়ে কলেজের শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া কলেজেরই সহকারী চিকিৎসক হন এবং দুই বৎসর পরে ১৮৭১ অব্দে কলিকাতা হইতে কলভিন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত হইয়া এলাহাবাদে গমন করেন। তথায় তিনি অতি অল্পদিনের মধ্যেই সৰ্ব্বসাধারণের প্রিয় এবং কৰ্ম্মস্থানে উচ্চতম হইতে নিম্নতম কৰ্ম্মচারী পৰ্য্যন্ত সকলের বিশ্বাস ও শ্রদ্ধাভাজন হন। তৎকালে হিন্দুস্থানী ও মুসলমান সম্প্রদায়ের ভিতর ডাক্তারী চিকিৎসার আদর ছিল না। হকীমী ও বৈদ্যক ভিন্ন আর কিছুর প্রতি সাধারণের শ্রদ্ধা ছিল না। বৈদ্যাক চিকিৎসা আয়ুৰ্বেদ মতে হইলেও বাঙ্গালী কবিরাজগণের দ্বারা এই শাস্ত্রীয় । চিকিৎসা প্ৰণালী যেরূপ উৎকর্ষ লাভ করে, হিন্দুস্তানী “বএদ’গণের মধ্যে