পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৫১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 o\ტ . বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । হইতে থাকে। বঙ্গে রেভারেণ্ড ডাঃ ডাফ প্রভৃতির ন্যায়. খৃষ্ট ধৰ্ম্মাবলম্বিনী বেগম সমরুর সাহায্যে উত্তর-পশ্চিমে এবং রেভারেণ্ড গােলোকনাথের * দ্বারা পঞ্জাবে খৃষ্টধৰ্ম্ম প্রচারিত হয়। এই স্রোত অবশ্য রাজা রামমোহন রায়-প্ৰবৰ্ত্তিত ব্ৰাহ্মধৰ্ম্মের দ্বারাই প্ৰধানতঃ প্ৰতিহত হইয়াছিল। আর প্রতিহত হইয়াছিল তন্ত্রসিদ্ধ বাঙ্গালী ব্ৰহ্মচারী কৃষ্ণানন্দ কর্তৃক। সনাতন গোস্বামী কয়েক শতাব্দী পূর্বে যেমন রাজপুতানায় আপ্যাত্মিক শক্তি সঞ্চার করিয়া জয়পুর, কেরোলী, খেৎড়ী প্রভৃতির অধিবাসীদিগের মতিগতি ফিরাইয়াছিলেন, কৃষ্ণানন্দ স্বীয় আধ্যাত্মিক শক্তিপ্রভাবে সেই কাৰ্য্য পঞ্জাবে সাধিত করিয়াছিলেন। তঁহারই সময় হইতে শত শত পঞ্জাববাসী কালীভক্ত এবং তন্ত্রসাধক হইয়াছিল। বাঙ্গালীর কালীবাড়ী এবং কলিকাতা কালীঘাটে পঞ্জাবী উপাসকের দৃশ্য তাই বিরল নহে। পঞ্জাব ইংরেজাধিকৃত হইবার প্রায় অৰ্দ্ধশতাব্দী পূৰ্ব্বে মহাত্মা কৃষ্ণানন্দ ব্ৰহ্মচারী এই প্রদেশ স্বীয় কৰ্ম্মক্ষেত্ৰ করিয়াছিলেন । ইনি ১৮৮২ অব্দে ৯২ বৎসর বয়সে প্ৰয়াগধামে দেহত্যাগ করেন। ব্ৰহ্মচারী অতি তরুণ বয়সে গৃহত্যাগ করতঃ উত্তর-পশ্চিম, পঞ্জাব, মধ্যভারত প্ৰভৃতি স্থান পরিভ্রমণ করেন। পঞ্জাবে যে প্ৰকাণ্ড প্ৰকাণ্ড প্রাচীন কালীবাড়ীগুলি দৃষ্ট হয়, যাহা দেখিয়া মহাত্মা অলকটু সাহেব থিয়াসফিষ্ট পত্রিকায় অনেক প্ৰশংসা করিয়াছেন, যাহা বিদেশীয় বাঙ্গালিগণের একমাত্ৰ আশ্রয়স্থল, বাঙ্গালীর সেই জাতীয় অনুষ্ঠান উক্ত ব্ৰহ্মচারীর কীৰ্ত্তি । এই মহাত্মা হাবড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন । ইনি বিবাহ করেন নাই । ইনি ভারতবর্ষের নানাস্থান পৰ্যটন করিয়া শেষ জীবনের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশে প্ৰবাসী হন। ব্ৰহ্মচারী মহাশয়ের ভ্রমণের সম্পূর্ণ বিবরণ নাই ; তবে স্থানে স্থানে তঁাহার স্থাপিত মঠ, দেবমন্দির, আশ্রম প্রভৃতি হইতে এবং তঁাহার সমসাময়িক বিশিষ্ট বন্ধুগণের নিকট হইতে র্তাহার মহৎ জীবনের অনেক সত্য উদ্ধার করা যাইতে পারে। কৃষ্ণানন্দ ব্ৰহ্মচারী শক্তিমন্ত্রে দীক্ষিত ছিলেন। এজন্য শক্তি-উপাসনার প্রধান প্ৰধান স্থানগুলিতে ইনি জীবনের অধিকাংশ কাল ক্ষেপণ করিয়াছিলেন। ইনি কামরূপ, নেপাল, জ্বালামুখী, হিংলাজ প্রভৃতি স্থানে গিরিগুহায়, নদীতটে, কুঞ্জমধ্যে কঠোর তপস্যা করেন এবং আরাবল্পী পৰ্ব্বতশিখরে 1. The Life and Times of Carey, Marshman and Ward, and Serampore missionaries, 1864.