পাতা:বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী (উত্তর ভারত) - জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস.pdf/৫২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী । ভারতীয় পরিব্রাজকের দল গঠিত করেন। তাহার ফলস্বরূপ “অমরনাথ,” “হাজারা” প্রভৃতি ভ্রমণবৃত্তান্ত প্রকাশিত হয়। ব্রাহ্ম আচাৰ্য সারদা বাবু যেমন আৰ্য্যসমাজভুক্ত হইলেন, আৰ্যসমাজী প্ৰসিদ্ধ পণ্ডিত লছমন দাস তেমনি ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম প্রচারক হইলেন এবং কালীবাড়ীর কর্তৃপক্ষীয়গণের মধ্যে প্রধান বাবু নবীনচন্দ্র রায় ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিলেন। গোলোকনাথ যেমন খৃষ্টধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিবার পর হইতে পঞ্জাবের শ্ৰী ফিরাইয়া দিয়াছিলেন, নবীন বাবু ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিয়া পঞ্জাৰী সমাজের অধিকতর উন্নতি সাধিত করিলেন । প্রকৃতপক্ষে রেভারেণ্ড । গোলোকনাথ এবং নবীন বাবুর মত পঞ্জাবের হিতকারী ব্যক্তি পঞ্জাবে পদার্পণ করিয়াছেন। কিনা সন্দেহ । উভয়েই নিঃস্ব অবস্থায় আসিয়া সমাজের শীর্ষস্থান অধিকার করিয়াছিলেন। উভয়েই তরুণ বয়সে গৃহ ত্যাগ করিয়াছিলেন। নবীন বাবু স্বীয় ডায়েরীতে লিখিয়াছিলেন—“চাকরীর জন্য আমাকে অনেক স্থানে অনাথের ন্যায় ভ্ৰমণ করিতে হইয়াছে, আমি জীবনের অধিকাংশ কাল অতি দীনহানের ন্যায় কাটাইয়াছি, একটি পয়সার অভাবে সমস্ত দিন অনাহারে গিয়াছে, এমন দিনও দেখিয়াছি। ভ্রমণের সময় যেখানে যেখানে মহাত্মা কৃষ্ণানন্দ স্বামীর কালীবাড়ী পাইয়াছিলাম, সেইখানেই পেট ভরিয়া খাইতে পাইয়াছি ও মনের সুখে নিদ্রা গিয়াছি । * * * আমার ন্যায় কতশত হতভাগা, কৃষ্ণানন্দের কালীবাড়ীর কৃপায় শ্ৰীমন্ত পুরুষ হইয়া উঠিয়াছে। ইচ্ছা হয় একবার সেই মহাত্মাকে জীবিত দেখিয়া তাহার চরণ ধরিয়া পূজা করি।” নবীন বাবু উপরোক্ত অবস্থা হইতে রাজকাৰ্য্যে পঞ্জাবের অনাররি ম্যাজিষ্ট্রেট, জষ্টিস অব দি পীস, ডেপুটী একাউণ্টাণ্ট জেনারেল, পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো, পরীক্ষক এবং ডেপুটি রেজিষ্ট্রার, কালীবাড়ীর পৃষ্ঠপোষক, ব্ৰাহ্মসমাজের সম্পাদক, ১৮৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত লাহাের ‘হিন্দুসভার’ সম্পাদক ও অন্যতম নেতা, পঞ্জাবের দেশীয় সমাজের সৰ্ব্বে-সৰ্ব্বা এবং পাণ্ডিত্যে অদ্বিতীয় বলিয়া গণ্য হইয়াছিলেন। গোলোকনাথ যথায় শিক্ষা ও সমাজসংস্কারের বীজ রোপণ করিয়াছিলেন, প্ৰতিমাপূজার বিরোধী ব্ৰাহ্ম ও আৰ্যসমাজ এবং তাহার পক্ষপাতী সনাতন ধৰ্ম্মরক্ষিণীসভার মধ্যে সামঞ্জস্যরক্ষাপ্রয়াসী সারদাবাবু যথায় হিন্দু মুসলমান খৃষ্টানের মধ্যে সম্ভাব সংস্থাপনের পথ পরিষ্কৃত করিয়া দিয়াছিলেন,-নবীন বাবু তথায় যুগান্তর আনয়ন করিলেন। ১৮৯০ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর তারিখে