পদাবলী—বিবিধ পদকর্তা—১৫-১৮শ শতাব্দী। 6 A তমালের কাধে মোর ভূজলত দিয়া । নিশ্চয় করিয়া তুমি রাখহ বান্ধিয়া ॥ (১) কৃষ্ণ কভু দেখিলেই পূরিবেক আশ । শুনিয়া কাতর যদুনন্দন দাস ॥ যব ধনী মুরছি পড়য়ে । নাসায় শ্বাস নাহি বহয়ে ॥ তব সব সখী একু ঠাম। শ্রবণে কহয়ে তুয়া নাম ॥ শুনইতে চেতন পাই। যতন্থ বিলাপয়ে রাই ॥ সো কি কহব তুআ পাশ । সহচরী-জীবন নৈরাশ ॥ অতএ চলহ বৃন্দাবন। কহয়ে এ দাস যত্ননন্দন ॥ তুয়া অনুরূপ এক পটে লিখিয়া দেয়ল তারক আগে। সো রূপ হেরি মুরছি পড় ভূতলে মানয়ে করম অভাগে ৷ আকাশে নব জলধর হেরি সেই ধনী কাতরে করু পরলাপ । নীলাম্বরে অবশ হোই না পরই অরুণাম্বরে তনু ঝাপ । (২) ঐছে দশা হেরি সকল সর্থীগণ রোয়ত যামিনী জাগি। কহে যদু-নন্দন শুন নন্দ-নন্দন মিলাহ সব জন ভাগী ॥ সখি রাধা-নাম কে কহিলে । শুনি মন কাণ জুড়াইলে ॥ কত নাম আছয়ে গোকুলে। হেন হিয়া না করে আকুলে। (১) বিদ্যাপতির “ন পোড়াইও রাধা-অঙ্গ না ভাসাইও জলে । মরিলে বাধিয়া রেখ তমালের ডালে ॥” এবং কৃষ্ণকমলের, “দেহ দাহন ক’রো ন দহন-দাহে। ভাসাইও না কেহ যমুনা-প্রবাহে। আমার শ্ৰীকৃষ্ণ-বিলাসের দেহ । সব সখীগণ মিলি, বাহু দুটি ধরি, বাধিও তমাল-ডালে।” প্রভৃতি পদ হইতে আরম্ভ করিয়া অনেক বৈষ্ণব-কবির পদেই রাধার মৃতদেহ তমালে বাধিয়া রাখিবার কথা উল্লিখিত আছে। এই পদটা উহাদের অন্যতম। (২) নীলাম্বরে কৃষ্ণের রূপ মনে পড়াতে তাহা ত্যাগ করিয়া অরুণাম্বরে (রক্তবর্ণ শাটীতে ) তনু ঝাপিতেছেন (আবৃত করিতেছেন)।
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।