বৈষ্ণব-চরিতীখ্যান—লোচনদাস–১৫৩৭ খৃষ্টাব্দ। సి) লোক-মুখে শুনি পুত্ৰ করিবে সন্ন্যাস । মোর মুণ্ডে ভাঙ্গি যেন পড়িল আকাশ ৷ একাকিনী অনাথিনী আর কেহ নাই। সব দুঃখ পাসরি তোমার মুখ চাই ॥ নয়নের তারা মোর কুলের প্রদীপ । তোমা পুণ্যে ভাগ্যবতী বলে নবদ্বীপ ॥ না ঘুচাহ আরে পুত্র মোর অহঙ্কার। তোমা না দেখিলে সব হবে ছারখার ॥ ভাগ্য করি মানে লোক দেখি তোর মুখ এখন আমারে দেখি হইবে বিমুখ ॥ তুমি হেন পুত্র মোর এ দেহের তারা। তুমি না থাকিলে হব জীয়ন্তেই মরা ॥ দুঃখ-ভাগী অভাগীরে ছাড়ি যাবে তুমি। গঙ্গায় প্রবেশ করি মরি যাব আমি ॥ এ হেন কোমল পা এ কেমনে হাটিবে। ক্ষুধায় তৃষ্ণায় অন্ন কাহারে মাগিবে ॥ ননীর পুতলী তনু রৌদ্রেতে মিলায়। কেমনে সহিব ইহা এ দুঃখিনী মায় ॥ বিষ থাঞ মরিব তোমার বিদ্যমানে । তোমার সন্ন্যাস যেন না শুনিএ কাণে ॥ আমারে মারিয়া পুত্ৰ যাইবে বিদেশ। আগুনি জালিয়া তাতে হইব প্রবেশ ॥ সৰ্ব্ব জীবে দয়া তোর মোরে অকরুণ । না জানি কি লাগি মোরে বিধাতা দারুণ ॥ রূপে গুণে শীলে পুত্র ত্ৰিজগতে ধন্য। সুচারু-মোহন-বেশ কেশের লাবণ্য ॥ সুন্দর লম্বিত কেশে মালতী বান্ধিয়া । জুড়ায় পরাণ মোর সে বেশ দেখিয়া ॥ তোর রূপ-গুণে বাপু কি দিব উপমা । ত্রিজগৎ-মাঝে বাপু তোমার মহিমা ॥ বয়স্ত-সহিত তুমি চলি যাহ পথে। দেখিয়া জুড়ায় হিয়া পুথি বাম হাতে।
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।