পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিবিধ—বোধেন্দু-বিকাশ—১৯শ শতাব্দীর মধ্যভাগ।
১৪৩৯

ফিরেছে সবার মতি নাহি পূজে ভগবতী।
আহারের সময়েতে ভগবতী[১] চলেছে॥
পায়ে দিয়ে বাঁকা বুট দাঁতে কাটে বিস্‌কুট।
গোটু হেল ড্যাম হুট মা বাপেরে বলেছে॥
এর চেয়ে সুখোদয় কবে আর কার হয়।
দেখ আর মহাশয় আশাতরু ফলেছে॥

আমার সেবক যত তারা সব জেঁকেছে।
হাতে করি পরাশর সরাসর ডেকেছে॥
স্মৃতি মনু বেদ আদি দূরে ফেলে রেখেছে।
কেহ না আদর করে বড় দায় ঠেকেছে॥
প্রকাশিয়া নব পথ নব মত লিখেছে।
সেই মত খাঁটি বটে সাহেবেরা দেখেছে॥
ছিল স্মার্ত্ত স্বার্থপর তার অর্থ ঢেকেছে।
পুনর্ভবা যত সুত সতী-পুত্ত্র থেকেছে॥
অপ্রমাণ যত কথা গার জোরে টেঁকেছে।
নানা যোগে যাগ পেয়ে কাঁচাতেই পেকেছে॥
এক রোকে এক ঝোঁকে ঝাঁকে ঝাঁকে ঝেঁকেছে।
এক জালে রুই আদি চুনা পুঁটি ছেঁকেছে॥
অতি বেগে এক রোখা জোর বায়ু হেঁকেছে।
সে বায়ুর প্রভাবেতে তাবেতেই বেঁকেছে॥
কলঙ্কের কটু-রস সুধা-সম চেকেছে।
উপহাসে অনায়াসে গায়ে সব মেখেছে॥
কেমনে প্রবল হবে সেই তাক তেকেছে।
শৃগালের মত সব এক ডাক ডেকেছে॥
সকলেই দেখিতেছে চক্ষু কারো নাই।
কোথা যুক্তি কোথা মুক্তি ভাবি আমি তাই॥
প্রকৃতি প্রকৃতি পেলে আকৃতির নাশ।
ভূতে ভূত মিশাইয়ে হয় অপ্রকাশ॥
অবিনাশী শূন্য এই স্বভাবেই রয়।
বল তবে এ জগতে মুক্তি কার হয়॥
ভোগেতে প্রত্যক্ষ সুখ আর সব শূন্য।
বল বল কোথা পাপ কোথা তবে পুণ্য॥

  1. মদ্য।