S 8:So কারাগারে । রাণীর সঙ্গে রাজার কৌতুক। বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । উল্কা রায় হাটিল ধরিয়া চোর করে। প্রণাম না করে পুনঃ দাড়াইয়া ডরে। মধু সিংহ সাবধানে আসি সমুখেতে। ধনপতি ধনের তজগিরা (১) দিল হাতে ॥ হেরি হাসি নরপতি পাত্রে সমপিলে। ত্বরিতে ভাণ্ডারে আন ইঙ্গিতে বলিলে ৷ মধু সিংহে পাণ দিয়া উঠিল রাজন। হরষিতে হাতে করি সে হার-রতন ॥ ছত্রপটেকি (?) হৃষ্ট মনে নৃপতি উঠিল। ভবানী সহায় বলি নকিব ডাকিল ॥ রাণীর সুকণ্ঠ বিরাজিত সেই হার । অন্দরে আপনি নিলে সহিতে তলোয়ার ॥ রাখে রাণী-কাছে কহে কৌতুক করিয়া। নিছিল যে চোরে হার বুক বিচারিয়া (২) ॥ আনিয়াছি দেখ সেই হার চোর-সনে। পুছ তাহে নিন্দে সিদ মারিল কেমনে ॥ (৩) রাণী বলে চোর পাল-জান চুরি-মৰ্ম্ম। (৪) চোর-সনে কথা কহী নহে নারী-ধৰ্ম্ম ॥ এই রূপে দুজনাতে চাতুরী করিয়া। তুষিলে রাণীরে রাজা হার গলে দিয়া ॥ নারায়ণ (৫) করি চোর সাধুরে সিংহলে। কোপমনে ধনপতি দুঃখ-হেতু চলে। কোটাল সাধুরে চক-মধ্যে বেড়ি দিয়া। মহাকষ্টে কারাগারে ফেলিল আটিয়া ॥ (১) লৌহ-শৃঙ্খল। (২) তোমার বক্ষ খুজিয়া। বিচারিয়া=খুজিয়া। এখনও পূর্ববঙ্গে “বিচূরাইয়া” কথা “খোজা” অর্থে ব্যবহৃত হয়। (৩) চোরকে জিজ্ঞাসা কর, তোমার নিদ্রাকালে সে কিরূপে সিঁদ কাটিল। (৪) তুমি চোরপাল অর্থাৎ তোমার রাজ্যে চোর পালিত হয়, তুমি তাহীদের মৰ্ম্ম জান। (৫) সত্যনারায়ণ ঠাকুর র্তাহার সেবা-অপরাধে সাধুকে সিংহলে এইভাবে চোর বানাইয়াছিলেন।
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।