সহজিয়া-সাহিত্য—জ্ঞানাদি সাধনা—১৭শ শতাব্দী । দেখাইয়া তুমার শ্ৰীগুরু হৈয়াছেন। শিষ্যে কহেন আমার শ্ৰীগুরু আমারে দেহের মধ্যে পৃথিব্যাদি পঞ্চভূতের সহিত নিত্য চৈতন্তরূপ আত্মা ঈশ্বরকে সাক্ষাৎ প্রত্যক্ষ দেখাইয়া আমাকে চৈতন্ত করিয়া আমার শ্ৰীগুরু হইয়াছেন। শ্ৰীগুরু জিজ্ঞাসেন তুমি যখন জম্বুদ্বীপে অজ্ঞান স্বরূপে অন্ধকারে অন্ধ ছিলায় তখন তুমি তোমার দেহার মৈধ্যে আত্মা চৈতন্ত ঈশ্বরকে না দেখিয়াছিল তখন তুমার এই দেহা কথা হৈতে আসিলেন। শিষ্যে কহেন আমার এই দেহ মাতৃগর্ভে হৈতে জম্বুদ্বীপ পৃথিবীতে আসিয়াছেন। শ্ৰীগুরু জিজ্ঞাসেন তোমার এই দেহ মাতৃগর্ভের মৈধ্যে কি কি দ্রব্যে জন্মিল। (১) * * * * শ্ৰীগুরু জিজ্ঞাসেন সেই তণ্ডুল আদি কথা জন্মে। শিষ্যে কহেন সেই তণ্ডুলাদি ধান্তাদিত জন্মে। ঐগুরু জিজ্ঞাসেন সেই ধান্ত্যাদি কথা জন্মে। শিষ্যে কহেন সেই ধান্ত্যাদি গাছে জন্মে। শ্ৰীগুরু জিজ্ঞাসেন সেই ধান্ত্যাদির গাছ কথা জন্মে। শিষ্যে কহেন সেই ধান্ত্যাদির গাছ নিত্যবীজ একটী পৃথিবীতে রোপণ করিলে পরে পৃথিবী অপ তেজঃ বায়ু আকাশ এই পঞ্চভূতের অংশ উঠিয়া সেই ধান্ত্যাদির নিত্য বীজের মধ্যে প্রবেশ করিয়া সেই একটা ধান্ত্যাদির অঙ্কুর জন্মিয় অনেক গাছ জন্মিয় সেই বস্তু গাছের মধ্যে ধান্তাদি জন্মে পরে সেই ধান্তাদিতে তণ্ডুলাদি জন্মে। * * * * * * । অতএব বুঝিলাম অদ্যজাত বালকের ঐ চতুর্দশ কৰ্ম্মের (২) শ্ৰীগুরু স্থানে শিক্ষা নাই। পরে জম্বুদ্বীপাদির অনিত্যদেশের লোক সেই নিত্যদেশের নিত্যকৰ্ম্মাদি পােসরণ করাইয় পরে অনিত্য জম্বুদীপের অনিত্য আহার আদি করাইয়া পরে অনিত্য লোকের অনিত্য ব্যবহারাদি শিক্ষা করাইয়া (১) কি প্রকারে পিতা ও মাতার দেহে শোণিতাদি জাত হইয়৷ পুত্রের উৎপাদন করিল, তাহ বিস্তারিত ভাবে লিখিত আছে। পিতামাতার দেহের রক্ত মাংস তণ্ডলাদির সার হইতে কিরূপে জন্মে তাহ লিথিয়া গ্রন্থকার পরবর্তী বিবরণ দিতেছেন। (২) চতুর্দশ কৰ্ম্ম যথা আহার, নিদ্রা প্রভৃতি। গ্রন্থকার বলিতেছেন, “অদ্যজাত বালকের শরীরে আছেন যদি ঈশ্বর না থাকিত তবে কি প্রকারে অদ্যজাত বালকে শ্ৰীগুরু-শিক্ষা বিনেহ স্বভাবেতে ঐ আহার, নিদ্রা, ভয় ইত্যাদি এই চাইর কৰ্ম্ম করে এবং অদ্যজাত বালকে স্বভাবেতে ঐ শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস, গন্ধ জ্ঞান করে এবং অদ্যজাত বালকেতে স্বভাবেতে ঐ মুখেতে শব্দ করে এবং হস্তে দ্রব্যাদি ধারণ করে এবং পদেহ চলন করে।” IVව්``
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।