প্রাচীন গদ্য-সাহিত্য—কৃষ্ণচন্দ্র-চরিত—১৮১১ খৃঃ । বিবেচনা করিয়া নবাবের দূত করিয়া একজন লোককে পাঠাইলেন। সে মোহনদাসকে কহিল আপনাকে নবাব সাহেব ডাকিতেছেন শীঘ্ৰ চলুন। মোহনদাস কহিল আমি রণ ত্যাগ করিয়া কি প্রকারে যাইব । নবাবের দূত কহিল আপনি রাজাজ্ঞা মানেন না। মোহনদাস বিবেচনা করিল এ সকল চাতুরী এ সময়ে নবাব সাহেব আমাকে কেন ডাকিবেন ইহা অন্তঃকরণে করিয়া দূতের শিরচ্ছেদন করিয়া পুনরায় সমর করিতে লাগিল। মীরজাফরালী থান বিবেচনা করিল বুঝি প্রমাদ ঘটিল পরে আত্মীয় একজনকে আজ্ঞা করিল তুমি ইঙ্গরাজের সৈন্ত হইয়া মোহনদাসের নিকট গমন করিয়া মোহনদাসকে নষ্ট করহ। আজ্ঞা পাইয়া একজন মনুষ্য মোহনদাসের নিকট গমন করিয়া অগ্নিবাণ মোহনদাসকে মারিল। সেই বাণে মোহনদাস পতন হইল। পরে নবাবী যাবদীয় সৈন্ত রণে ভঙ্গ দিয়া পলায়ন করিল ইংরাজের জয় হইল। পরে নবাব স্রাজেরদৌলা সকল বৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া মনে মনে বিবেচনা করিলেন কোনমতে রক্ষা নাই আপন সৈন্ত বৈরি হইল অতএব আমি এখান হইতে পলায়ন করি। ইহাই স্থির করিয়া নৌকাপরি আরোহণ করিয়া পলায়ন করিলেন। পরে ইঙ্গরাজ সাহেবের নিকটে সকল সমাচার নিবেদন করিয়া মীরজাফরালি খান মুরসিদাবাদের গড়েতে গমন করিয়া ইঙ্গরাজী পতাকা উঠাইয়া দিলে সকলে বুঝিল ইঙ্গরাজ মহাশয়ের দিগের জয় হইল। যাবদীয় প্রধান প্রধান মনুষ্য ভেটের দ্রব্য দিয়া সাহেবের নিকট সাক্ষাৎ করিলেন। সাহেব সকলকে আশ্বাস করিয়া যিনি যে কৰ্ম্মে নিযুক্ত ছিলেন সেই সেই কৰ্ম্মে তাহাকে নিযুক্ত করিয়া রাজপ্রসাদ দিলেন। মীরজাফরালিকে নবাব করিয়া সকলকে আজ্ঞা করিলেন তোমরা সকলে সাবধানপূর্বক রাজকৰ্ম্ম করিব রাজ্যের প্রতুল হয় এবং প্রজালোক দুঃখ না পায়। সকলে আজ্ঞানুসারে কার্য্য করিতে লাগিলেন। পরে নবাব স্রাজেরদৌলা পলায়ন করিয়া যান। তিন দিবস অভূক্ত অত্যন্ত ক্ষুদিত নদীর তটের নিকটে এক ফকীরের আলয় দেখিয়া নবাব কর্ণধারকে কহিলেন ফকীরের স্থান তুমি ফকীরকে বল কিঞ্চিত খাদ্য সামগ্ৰী দেও একজন মনুষ্য বড় পীড়িত কিঞ্চিত আহার করিবেক । ফকীর এই বাক্য শ্রবণ করিয়া নৌকার নিকটে আসিয়া দেখিল অত্যন্ত নবাব স্রাজেরদৌল বিষণ্ণবদন । ফকীর সকল বৃত্তান্ত জ্ঞাত হইয়াছে বিবেচনা করিল নবাব পলায়ন করিয়া যায় ইহাকে আমি ধরিয়া দিব আমাকে পূৰ্ব্বে যথেষ্ট নিগ্ৰহ করিয়াছিল তাহার শোধ লইব । ইহাই মনোমধ্যে করিয়া করপুটে বলিল আহারের দ্রব্য আমি প্রস্তুত করি Xసిసిసి
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।