برنامه ۹ نه
- -
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । দশম কোথায় আছে তুমি যদি আমাদের দশমকে দেখাইতে পার, তবে যার পর নাই এমন উপকার কর। আত্মদর্শী কহিলেন ভাল ভাল কিন্তু তোমরা বাহবিষয় মাত্রেই অত্যন্ত অভিনিবেশ করিওনা আত্মজ্ঞানে জাগরূক হও বাহগণনা করিয়া আত্মগণনা করিলে কিম্বা আত্মাকে গণিয়া বাহাগণনা করিলে তোমরা সকলেই দশম হইবা । আদি মধ্য শেষ সকলেই দশম । তোমরা সব শ্রেণীবদ্ধ হইয়া দাড়াও আমি দেখাইয়া দি। এ বাক্য শুনিয় তাহারা সব এক সারি হইয়া দাড়াইল । পরে আত্মদর্শী প্রথমাবধি শেষ পর্য্যন্ত দ্বিতীয়াবধি প্রথম পৰ্য্যন্ত তৃতীয়াবধি দ্বিতীয় পৰ্য্যন্ত এবং চতুর্থাবধি তৃতীয় পৰ্য্যন্ত মালার দ্যায়ে গণনা করিয়া সকলকে দশম রূপে প্রতিপন্ন করিয়া দিলেন । তদনন্তর তাহারা সকলেই সংশয়াপন্ন হইয়া কহিল যে আপনারা মনে বুঝিয়া দেখ তো ইনি আপনি আমাদিগের মধ্যে প্রবিষ্ট হইয়া আমাদিগকে ভুলান ত নাই। ইহা কহিয়া আত্মদর্শকে কহিল আপনি হোরে যাও তো আমরা আপনারা মনে যুক্তি করিয়া বুঝি তবে আমাদের প্রামাণ্য হইবেক । ইহা কহিয়া সকলেই প্রত্যেকে মনন করিয়া সাক্ষাৎ প্রত্যক্ষ রূপে স্ব স্ব স্বরূপ দশমকে পাইয়া মোহ শোক দুঃখ পরিত্যাগ করিয়া কৃতকৃত্য ও অতি সন্তুষ্ট হইয়া নিরতিশয় সুখ পাওত স্বাস্থ্য পাইল। এতাদৃশ দশম স্তায়েতে এ জীবদের বিশ্বাত্মা সৰ্ব্বান্তর্যামী পরমেশ্বরের বিস্মরণ ও তৎপ্রযুক্ত বাহ বিষয়ানুরাগ নিমিত্তক মোহ শোক জন্ম মৃত্যু জরা ব্যাধিরূপ সাংসারিক দুঃখ ভাগিতাত্মক বদ্ধত্ব ও গুরু বেদান্ত-বাক্য শ্রবণাধীন পরমেশ্বর স্বরূপ সাক্ষাৎকার ও তৎপ্রযুক্ত সাংসারিক দুঃখাত্যন্তিক পরিত্যাগ নিরতিশয় মুখরূপ মোক্ষ প্রাপ্তি হয় ইহা বৈদগম্ভীরা কহেন। অন্ধ-পঙ্গু ন্যায়ের কথা। এক ব্যক্তি অন্ধ দর্শন সামর্থ্যহীন আর এক ব্যক্তি পক্ষু অর্থাৎ খোড়া গতিশক্তিশূন্ত। এতাদৃশ দুই জনের পার্থক্যেতে তাদৃশ ক্রিয়া সংসিদ্ধি হইতে পারে না। পঙ্গুর অন্ধস্কন্ধারোহণে উভয় সংযোগেতে যেমন ক্রিয়া সিদ্ধি হয় এতন্ন্যায়েতে প্রকৃতি পুরুষ সংযোগে ভোগ মোক্ষ ক্রিয়া সিদ্ধি হয় উভয় বিয়োগেতে ক্রিয় সিদ্ধি হয় না । ইহা সাঙ্খ্য দার্শনিকেরা কহেন। এই অন্ধ পঙ্গু ছায়ের পাতঞ্জল দার্শনিকের প্রকারান্তরে বর্ণনা করেন। যেমন এক মহাপুরুষ থাকেন তার ক্ষেত্ৰজ্ঞ নামে এক পঙ্গু দাস থাকে এবং প্রকৃতি নামে এক অন্ধ দাসী থাকে। এক দিবস ঐ মহাপুরুষ পঙ্গু দাসকে কহিলেন আমার সংসারের সকল কৰ্ম্মের ভার তোমাকে দিলাম তুমি