পদাবলী—গোবিন্দ দাস—১৬শ শতাব্দী ৷ গুরুজন-নয়ন পাপগণ-বারত (১) মরুত-মণ্ডল-ধূলি। তাহিক মেলি চলল ব্রজরঙ্গিণী পতি-গেহ-নীতহি ভুলি (২) ॥ যত যত বিঘিনি জিতল অনুরাগিণী সাধসি মনসিজ-মন্ত্র। (৩) গোবিন্দ দাস কহই অব সমুঝহ হরিসঞে রসময়-তন্ত্র । কণ্টক গাড়ি কমল-সম পদতল মঞ্জীর চীরহি বাপি । গাগরি বারি ঢারি করি পিছল চলতহি অঙ্গুলি চাপি । (৪) মাধব তুয়া অভিসারকি লাগি । দুরতর পন্থ গমন ধনী সাধয়ে মন্দিরে যামিনী জাগি । (৫) করযুগে নয়ন মুদি চলু ভামিনী তিমির পয়ানক আশে। মণি-কঙ্কণ-পণ-ফণী-মুখ-বন্ধন শিখই ভুজগ-গুরু পাশে । (৬) গুরুজন-বচন বধির সম মানই আন শুনই কহ আন। পরিজন-বচনে মুগধি সম হাসই গোবিন্দ দাস পরমাণ ॥(৭) (১) পাপিষ্ঠগণের বার্তা ( কলঙ্ক-প্রচার ) । (২) পতিগৃহের নীতি বিস্তৃত হইয়া। (৩) মন্মথ-মন্ত্র-সাধনা করিয়া যত প্রকারের বিঘ্ন জয় করিল। (৪) নিজের আঙ্গিনায় কণ্টক পুতিয়া এবং বস্ত্র দ্বারা নুপুর আবৃত করিয়া চলিতে থাকে। এবং কলসীর জল ঢালিয়া পথ পিছল করিয়া অঙ্গুলী চাপিয়া হাটে। গাড়ি = পুতি ( এখনও পূৰ্ব্ববঙ্গে প্রচলিত ) ৷ (৫) হে কৃষ্ণ ! তোমার অভিসারের জন্ত মন্দিরে যামিনী জাগিয়া দূত্র পথ যাইবার যে সাধনা তাহা করিতে থাকে। (৬) অন্ধকারে পথ-ভ্ৰমণ শিখিবার জন্ত হস্ত দ্বারা চক্ষু ঢাকিয়া চলিতে থাকে। ভুজগ-গুরুর ( যে সপের মন্ত্র জানে) তাহার নিকট সাপের মুখ-বন্ধ করিবার মন্ত্র শিখে ; এবং ইহা শিথিবীর পণ অর্থাৎ পারিশ্রমিক-স্বরূপ তাহাকে নিজের মণি-কঙ্কণ দান করে। (৭) গুরুজনের বাক্য শুনিয়া বধিরের মত থাকে এবং এক শুনিতে আর কথা কহে। পরিজনের বাক্যে মুগ্ধার হ্যায় হাসিতে থাকে। গোবিন্দ দাস ইহার সাক্ষী । গোবিন্দ দাসের এই পদটা লইয়া কৃষ্ণকমল গোস্বামী নিম্নলিখিত গানটী রচনা করিয়াছেন—“যখন নব অনুরাগে, হৃদয়ে লাগিল দাগে, বিচারিলাম আগে পাছের কাযে। যা যা কর্তে হবে আমার তামবধুর লাগি ॥ অঙ্গনে ঢালিয়া জল, করিয়া অতি পিছল, গতাগতি করিয়া শিখিতাম। আমার যেতে যে হবে গো, রাই বলে বাজিলে বাশী, বধুর লাগি পিছল পথে। হইলে আঁধার রাতি, পথমাঝে কাটা পাতি, গতাগতি করিয়া শিখিতাম। আমার যেতে যে হবে গো, বধুর লাগি, কণ্টক-কানন-মাঝে ॥ এনে বিষ-বৈদ্যগণে, তন্ত্ৰ-মন্ত্র শিখেছিলেম কত, ভুজঙ্গ-দমন লাগি। বঁধুর লাগি সইলাম যত, এক মুখে কৈব কত, হত বিধি সব কৈল হত।” ইত্যাদি । చి? రి రిలి
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।