প্রাচীন গদ্য-সাহিত্য—মৃত্যুঞ্জয়ের প্রবোধ-চন্দ্রিকা—১৮১০ খৃঃ। সকল বিষয় জ্ঞাত করিয়া তাহার লোক সমভিব্যাহারে লইয়া স্বদেশে প্রস্থান করিল। পথ হইতে বিশ্ববঞ্চক আপন বাটী গেল বিশ্বভণ্ড কপটোম্মাদ হইয়া স্বালয়ে প্রবেশ করিল। মহাজনের লোকেরা যখন টাকার তাগাদ করে তখন কেবল ভূ ভূ এই কহে আর কিছুই কহে না । এইরূপ কিছু দিন দেখিয়া সাধুর লোকের স্বদেশে গিয়া উত্তমণকে অধমর্ণের সকল বৃত্তান্ত বিজ্ঞাপন করিল। সদাগর অজ্ঞাতকুলশীল লোকের সহিত সারল্য করা মূর্থের কৰ্ম্ম এই প্রযুক্ত অত্যন্ত লজ্জিত হইয় আপন হানি স্বীকার করিয়াও স্ববুদ্ধিলাঘব-জন্ত অপ্রতিষ্ঠা ভয়েতে কাহাকেও কিছু না কহিয়া তুষ্ণীভূত হইয়া থাকিলেন। তদনন্তর বিশ্ববঞ্চক আসিয়া বিশ্বভণ্ডকে কহিল মহাজন বেটাকে কেমন ফাকি দিলাম এক্ষণে আমার ভাগ দেও। ইহা শুনিয়া বিশ্বভণ্ড পূৰ্ব্ববৎ পাগল হইয়া ভূ ভূ কেবল ইহাই কহিল। পরে বিশ্ববঞ্চক কহিল যাও যাও ভাই আমার সহিত কৌতুক করার কার্য্য নাই। আমার হায্য ভাগ আমাকে শীঘ্ৰ দেও। ইহাতে ভূ ভূ এই মাত্র উত্তর করিল। এইরূপে কিছুদিন সেথা থাকিয়া নানাপ্রকার ভয়-প্রতি-প্রদর্শন দ্বারা যত যত তাগাদ করে তাহাতে কেবল ভূ পাইয়া অত্যন্ত বিরক্ত ও কুপিত হইয়া বিশ্ববঞ্চক কহিল ভাল রে বেটা ভাল আমি বিশ্ববঞ্চক আমাকেও ভাড়াইলি তুই যথার্থ বিশ্বভণ্ড বটিস্। যে শিখাইল ভূ তারেই দিলি ভু এই কহিয়া চোরের লাজে না কাদে এতন্ন্যায়ে কেবল ভেকুয় হইয়া ভবনে গেলেন। এ কথার অবাস্তর তাৎপৰ্য্যাৰ্থ সকল স্ববুদ্ধির স্ববুদ্ধিতে বুঝিবেন। ইতি প্রবোধ-চন্দ্রিকায়াং দ্বিতীয় স্তবকে চতুর্থ কুসুমং। পশ্চাৎ অসম্বরণীয় যে আরম্ভ তাহা করিবে না কিন্তু উত্তর কালে উপসংহাৰ্য্য যে তাহাই করিবে ইহার কথা । ভাণ্ডীর নামে বনমধ্যে এক উন্থ থাকে। সে জরাঅবস্থাতে জীর্ণ হইয়া ইতস্ততে ভ্রমণ করিয়া লতা-পল্লব-শাখাতৃণাদি আহার-করণে খেদান্বিত হইয়া মনে মনে চিন্তা করিল যে ঈশ্বর আমাদের জাতিকে লম্বা মুখ দিয়াছেন বটে কিন্তু এক্ষণে তাহাতে আমার কিছু হইতে পারে না। সম্প্রতি আমাকে দীনহীন জানিয়া অনুগ্রহ করিয়া অতি বড় লম্বায়মান যদি বদন দেন তবে আমি শুইয়া শুইয়া অনায়াসে মুখ বাড়াইয়া চরাই করি। উট এইরূপ মনে ভাবিতেছে ইতি মধ্যে সৰ্ব্বজ্ঞ বাকৃসিদ্ধ এক ঋষি সেই ›ፃ »«
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৭৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।