প্রাচীন গদ্য-সাহিত্য-মার্সম্যানের ভারত-ইতিহাস–১৮৩১ খৃঃ। ফৌজদারী আদালত সকল নায়েব নাজিমের কর্তৃত্বাধীনে ছিল এবং তাহার তাবে নানা প্রদেশের ফৌজদারের তাবৎ কৰ্ম্ম নিষ্পত্তি করিত। ১৭৭৭ সালের মধ্যসময়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন উকীল ঢাকায় গিয়া বাস করেন এবং তাহার সেই বসতি করণের মঙ্গল অতি শীঘ্র দৃষ্ট হইল বিশেষতঃ তথাকার ফৌজদারী আদালতে কোন একজন পাইকের নামে নালিশ হইয়াছিল পরে তাহার দোষ সাব্যস্ত হইলে তাহাকে টাকা ফিরিয়া দেওনের হুকুম হয় কিন্তু সেই আদালতের এক জন আমলা সেই ডিক্ৰী জারি করিলে তাহার নামে ঐ ডিক্ৰী জারি করণের অপরাধে সুপ্রিম কোর্টে লালিশ হইল তাহাতে ঐ উকীলের এক জন ভৃত্য ফৌজদার যে সময়ে আপনার মিত্র আমলা প্রভৃতি লইয়া বসিয়া ছিলেন তৎসময়ে তাহার ঘরে গিয়া কোন পরওয়ান না দেখাইয় তাহার দেওয়ানকে ধৃত করিতে উদ্যোগ করিল। কিন্তু সকলেই তাহার সেই উদ্যোগের প্রতিবন্ধক হওয়াতে সেই ব্যক্তি আপনার মনিবকে সমাচার দিল তাহাতে ঐ উকীল স্বয়ং অনেক লোক সঙ্গে করিয়া ফৌজদারের বাটীর বাহিরের ফটক ভাঙ্গিয়া বলক্রমে অন্তঃপুরে প্রবেশ করিতে লাগিলেন অপর ফৌজদার আপনার ফটক ভগ্ন দেখিয়া এমত বুঝিলেন যে আমার যৎপরোনাস্তি দুৰ্দ্দশা ও অপমান হইল তাহাতে তিনি আপনার সন্মান রক্ষা করণার্থ জনতা অন্তঃপুরে প্রবেশের অবরোধ করিতে লাগিলেন। ইহাতে একটা দাঙ্গা উপস্থিত হয় এবং তাহাতে ঐ ফৌজদারের পিতা এক তলওয়ারের দ্বারা মস্তকাঘাতী হইলেন এবং তাহার সম্বন্ধীর উপরেও ঐ উকীল স্বয়ং এক পিস্তলের দ্বারা গুলি নিক্ষেপ করিয়া আঘাতী করিলেন অপর সুপ্রিম কোর্টের হাইদ নামক একজন জজ সাহেব এই সকল ঘটনার বার্তা অবগত হইলে ঢাকার ইউরোপীয় সৈন্তাধ্যক্ষের নিকটে পত্র প্রেরণ করিয়া ঐ উকীলের কৃতকার্য্যে আপনার সন্তোষ জানাইয় তাহার সাহায্য করিতে ঐ সেনাপতিকে সৰ্ব্বপ্রকারে মিনতি করিলেন কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের উকীল এই রূপেতে ফৌজদারী আদালতের কৰ্ম্মে ব্যাঘাত জন্মাইলে সুতরাং তাবৎ ফৌজদারী কৰ্ম্ম স্থগিত হইল যেহেতুক আদালতের প্রত্যেক আমলার এতদ্রুপ ভাবিলেন যে আমরা যদি কোন পক্ষে ডিক্ৰী করি তবে ফৌজদারের যেরূপ অপমান হইয়াছে তন্দ্রপ আমারদেরও হইবে। সুপ্রিম কোর্ট ও গবর্ণমেণ্টেতে তিন বৎসর পর্য্যন্ত নিয়ত বিবাদ হওয়াতে দেশস্থ তাবল্লোকের অস্থির মনস্ক ও ভয়াকুল হইল কিন্তু ১৭৭৯ সালে ঐ বিবাদ স্বরূপ বিস্ফোটকের মুখ হয় তাহার কারণ লিখি। ›ዓ8›
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮০৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।