পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سواره ها গ্রাম্য পাঠশালা । গোবৈদ্য-দর্শনে ভীতি। বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । আমি কাহারে সঙ্গে কথা কহিতাম না। আমার মুখে পরিষ্কৃত হইয়া কথা বাহির হইত না । যে দুই একটা কথা বাহির হইত সেও আধ আধ তাহ শুনিয়া সকলে হাস্ত করিত। আমাকে যদি কেহ বড় করিয়া ডাকিত তাহা হইলেই আমার কান্না উপস্থিত হইত । বড় কথা শুনিলেই আমার চক্ষের জলে বুক ভাসিয়া যাইত। এ জন্ত আমার সঙ্গে কেহ বড় করিয়া কথা কহিত না । আমি সকল দিবস সেই স্কুলেই থাকিতাম। মেয়ে ছেলের মত আমাকে বাটীর মধ্যে রাখা হইত না। তখন ছেলেরা ক খ চৌত্ৰিশ অক্ষর মাটিতে লিখিত পরে এক নড়ি হাতে লইয়া ঐ সকল লেখা উচ্চৈঃস্বরে পড়িত। আমি সকল সময়েই থাকিতাম। আমি মনে মনে ঐ সকল পড়াই শিখিলাম । সেকালে পারসী পড়ার প্রাদুর্ভাব ছিল। আমি মনে মনে তাহীও খানিক শিখিলাম। আমি যে ঐ সকল পড়া মনে মনে শিখিয়াছি তাহা আর কেহ জানিত না। আমাকে পরিজনের সমস্ত দিন বাহিরে রাখিতেন। কেবল স্নানের সময়ে বাটীর মধ্যে আনিয়া স্নানাহারের পরেই আবার বাহিরে রাখিয়া আসিতেন আর সন্ধ্যার পূৰ্ব্বে বাটার মধ্যে আনিতেন। এই প্রকার সকল দিবস আমি স্কুলে মেম সাহেবের কাছেই বসিয়া থাকিতাম। তখন আমার মনের অবস্থা কি প্রকার ছিল তাহ আমি বুঝিতে পারি নাই। ভয়ে যেন আমার মন এককালে জড়াইয়া রাখিয়াছিল। যদিও মনের কখন একটু অন্ধুর হইয়া উঠিত অমনি ভয় আসিয়া চাপা দিয়া রাখিত । দ্বিতীয় রচনা । এক দিবস আমার খুড়া বাহির বাট হইতে আমাকে বাটীর মধ্যে আনিতেছেন ঐ সময়ে একজন গোবৈদ্য একখানা ছালা ঘাড়ে করিয়া আমার সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হইল। আমি তাহাকে দেখিয় ছেলেধরা ভাবিয়া ভয়ে এককালে মৃতপ্রায় হইলাম। তখন আমার মনে এত ভয় হইয়াছিল যে আমি দুই হাত দিয়া চক্ষু ঢাকিয়া থর থর করিয়া কঁাপিতে লাগিলাম। সেই সময়ে সে স্থানে যত লোক ছিল তাহারা আমাকে ভয় নাই ভয় নাই বলিয়া হাসিয়া মহাগোল করিতে লাগিল। আমার খুড়া আমাকে কোলে লইয়া বাটীর মধ্যে গিয়া বলিলেন আজ ভাল ছেলেধরার হাতে পড়িয়াছিলাম। এই বলিয়া তিনি ও আর সকলেই হাসিতে লাগিলেন। তখন আমার মায়ের কাছে গিয়া আমি কান্দিতে লাগিলাম। আমার মা আমাকে কোলে লইয়া সাস্তুনা করিয়া বলিলেন তোমার এত ভয়