›ꬃፃ8 পিসীমার নিকট কায শিক্ষণ । বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । তিনি শুনেন তবে আর কিসের ভয়। এখন যদি আমার ভয় করে তবে আমি মনে মনে পরমেশ্বর পরমেশ্বর বলিয়া ডাকিব। মার ঐ কথা আমার চিরস্থায়ী হইয়াছে। মা বলিয়াছেন আমাদের পরমেশ্বর আছেন। আমাদের বাটীর নিকট জ্ঞাতি খুড়ার বাট আছে। সেই বাটতে এক খুড়ীমা ছিলেন। আমি ঐ ছেলেট লইয়া সেই খুড়ীমার নিকট সকল দিবস থাকিতাম। সে বাটতে অধিক লোক ছিল না খুড়ার তিন জন আর খুড়ীমা আর ছেলেপিলে কয়েকট মাত্র। সে খুড়ীমার হাতে পায়ে রস বাত বেদন ছিল। আমি ঐ ছেলে লইয়া সকল সময় খুড়ীমার কাছে থাকিতাম তিনি ঐ সংসারের সকল কায করিতেন আর আমার কাছে বসিয়া ঐ সকল কাযের কথা বলিয়া বলিয়া কান্দিতেন। আর বলিতেন আমার মরণ হইলেই বাচি আমি আর কায করিতে পারি না। খুড়ীমার ঐ সকল খেদোক্তি শুনিয়া আমার মনে ভারী কষ্ট হইত। তখন আমি কোন কায করিতে জানি না তথাপি খুড়ীমার কষ্ট দেখিয় আমার অত্যন্ত কষ্টবোধ হইত। এক দিবস আমি বলিলাম তুমি বসিয়া থাক আমি কায করি। তিনি বলিলেন তুমি কি কায করিতে পার। আমি বলিলাম আমাকে বলিয়া দিলে আমি সকল কায করিতে পারি। তিনি বলিলেন তোমাকেত কোন কায করিতে দেখিনে তুমি কি কায জান। বিশেষ তোমাকে কায করিতে কেহ দেখিলে আমাকে গালি দিবে। তখন আমি বলিলাম তুমি কাহার নিকট বলিও না আমাকে বলিরা দাও আমি কায করি । তখন তিনি বলিয়া বলিয়া দিতে লাগিলেন আমি অহলাদে নাচিয়া নাচিয়া সকল কায করিতে লাগিলাম। এই প্রকার করিয়া অামি ক্রমে ক্রমে ঐ খুড়ীমার কাছে যাবতীয় কায করিতে শিখিলাম। তিনি বসিয়া পাক করিতেন আমি ঐ পাকের সমুদায় প্রস্তুত করিয়া দিতাম। এই প্রকার কায করিয়া দিতে দিতে আমিও পাক করিতে শিখিলাম। আমি ঐ বাটীর সকলকে পাক করিয়া দিতাম। আমি যে এ সকল কার্য শিখিয়াছি আমাদের বাটতে কেহ জানিত না। সে খুড়ীম আমাকে যৎপরোনাস্তি স্নেহ করিতেন। আমি সৰ্ব্বদা তাহার নিকটে থাকিতাম । এই প্রকারে কিছু দিবস যায়। এক দিবস আমি সেই খুড়ীমার মাথাতে তৈল দিতেছিলাম ইতিমধ্যে আমার পিসী আসিলেন। আমি পিসীমাকে দেখিয়া ঘরের মধ্যে গিয়া লুকাইয়া থাকিলাম। তিনি আমাকে দেখিতে পাইয়া বলিলেন মা আমাকে দেখিয়া লুকাইলে কেন। তখন আমার ঐ খুড়ীমা বলিলেন আমার মাথাতে তৈল দিতেছিল পাছে তুমি
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৩২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।