ইহা এক প্রকার নিরূপিত হইয়াছে যে পিতামাতার শরীর সুস্থ ও সবল হইলে, সন্তানও তদনুরূপ সুস্থ ও সবল শরীর প্রাপ্ত হয় এবং তদ্বিপরীত হইলে বিপরীত ফলের উৎপত্তি হয়। সকলেই অবগত আছেন শ্বাস, যক্ষ্মা, কুষ্ঠ, উন্মাদ, বাত, উদরাময় প্রভৃতি নানা রোগ কোন বংশে একবার প্রবিষ্ট হইলে পুরুষানুক্রমে চলিয়া আইসে এবং প্রত্যক্ষ দেখা গিয়াছে, কোন কোন পরিবারে অন্ধতা-রোগ ও অঙ্গবৃদ্ধিও পুত্ত্র পৌত্ত্র দৌহিত্রাদি ক্রমে অনেক পুরুষ পর্য্যন্ত হইয়া আসিতেছে। এই বাঙ্গলা দেশের অনেকানেক ব্যক্তির হস্তপাদে অধিকাঙ্গুলি ও লিপ্তাঙ্গুলি হওয়াতে তাহারদিগের সন্তান-পরম্পরারও সেইরূপ অঙ্গ বৈলক্ষণ্য ঘটিয়াছে। অতএব সন্তানেরা পিতামাতার বিষয়-সহকারে তাঁহারদের শারীরিক রোগেরও অধিকারী হয়। ফলতঃ তাহারা রোগাক্রান্ত হইয়া ভূমিষ্ঠ না হউক পিতামাতার এরূপ রোগেই দুর্ব্বল প্রকৃতি প্রাপ্ত হয় যে শারীরিক নিয়মের অত্যল্প ব্যতিক্রম ঘটিলেই পীড়া জন্মে। কোন কোন পরিবারস্থ ব্যক্তিরা পুরুষানুক্রমে দীর্ঘায়ুঃ বা অল্পায়ুঃ প্রাপ্ত হইয়া থাকে। টামস্ পার নামে এক ব্যক্তি ১৫২ বৎসর বয়সে প্রাণ পরিত্যাগ করে। তাহার এক পুত্ত্র ১০৯, এক পৌত্ত্র ১১৩, এবং এক প্রপৌত্ত্র ১২৪ বৎসর জীবিত ছিল। স্কট্লণ্ডের অন্তঃপাতী গ্লাস্গো নগরের একটী স্ত্রীলোক ১৩০ বৎসর বয়ঃক্রমেও সুস্থ শরীরে কাল যাপন করিতেছিল। তাহার পিতা ১২০ এবং পিতামহ ১২৯ বৎসরে পরলোক প্রাপ্ত হয়।
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাচীন গদ্য-সাহিত্য—অক্ষয়কুমার দত্ত—১৯শ শতাব্দীর মধ্যভাগ।
১৮১৯