অন্ন পানী না খায় রাণী ভাবছে সর্ব্বক্ষণ।
জান্তে এলাম কোন্ দেবতা কল্ছে বিড়ম্বন॥
রোগ ঔষধের কর্ত্তা বটে রক্ষা করেন জীব।
মনে হাসেন কথা কন লজ্জা পেলেন শিব॥
সম্ভাষ সম্ভাষ বলি বললেন মহাশয়।
দেব-সভাতে প্রণাম লয়ে বস্লেন হিমালয়॥
গুটি পাঁচ সাত সিদ্ধি বড়ী মহাদেবকে দিলেন।
ভক্তিভাবে মহাদেব তৎক্ষণাতে লইলেন॥
নিজ-পুরী থেকে তাহা দুর্গা শুনিল।
যত্ন করিয়া পিতা ডাকিয়া আনিল॥
নিঠুর কঠোর হয়েছ তুমি পাসরিয়াছ ঝী।
শিব-নিন্দা কর্ছো কত তার আর বলিব কি॥
কও গা বাবা কত কথা সে সকল শুন্ব পাছে।
সত্য করে বল বাবা মা কেমনে আছে॥
তুমি বল নিঠুর কঠোর শম্ভু বলে শিলে।
ছার মেনকার বাক্য শুনে তোমায় নিতে এলে॥
তা শুনিয়া গৌরী মাত কান্দিয়া অস্থির।
পাহাড়ে মেঘের বৃষ্টি যেন পড়্ছে আখি-নীর॥
মেনকা দিয়াছিলেন সন্দেশ দিলেন দুর্গার হাতে।
ক্ষমা পেলেন নারায়ণী তুষ্ট হলেন তাতে॥
যত্ন করি মহেশ্বরী রন্ধন করিলা।
শ্বশুরে জামাতায় তাহে ভোজনে বসিলা॥
বাপকে বসিতে দিলা রত্ন-সিংহাসন।
শিবকে বসিতে দিলা ভাঙ্গা কুশাসন॥
শয়ন-কালে দুর্গা বলে আজ্ঞা দেহ স্বামী।
ইচ্ছা করে পিতার বাড়ী কাল যাইব আমি॥
কি দুঃখে যাবে দুর্গা কিছু কি আমার নাই।
দেখেছি তোমার কাঙ্গাল পিতার ঘর দরজা নাই॥
দুর্গা বলে আমি কৈলে পাছে দ্বন্দ্ব হবে।
সেই যে আমার কাঙ্গাল পিতা ভিখ্ মেঙ্গেছে কবে॥
নানা দান পুণ্যবান্ দেব-কার্য্য করে।
এক দফাতে কাঙ্গাল বটে ভাঙ নাই তাদের ঘরে॥
পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৬১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট—বিবিধ গান।
১৯০৩