পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদারনাথ দাস S8ዔ ছড়াইয়া পড়িয়াছিল। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে গভর্নমেন্ট তাহাকে সি. আই. ই উপাধি দানে সম্মানিত করেন এবং ভারত ধর্মমহামণ্ডলের কর্তৃপক্ষ তাহাকে “ধাত্রীবিদ্যা মহার্ণব” উপাধি প্ৰদান করেন। গভর্নমেন্টের চাকরি হইতে অবসর গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তার কেদারনাথ কলিকতা কারমাইকেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যাপক ও স্ত্রীরোগচিকিৎসক নিযুক্ত হইয়াছিলেন। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে উক্ত কলেজের প্রিন্সিপালের পদ খালি হইলে তঁহাকেই সেই পদে নিযুক্ত করা হইয়াছিল। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত তিনি সুখ্যাতির সহিত ঐ পদে কাৰ্য করিয়া গিয়াছেন। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে গভর্নমেন্ট তাঁহাকে স্যার উপাধিতে ভূষিত করিয়াছিলেন। শিক্ষক ও অধ্যাপকের কার্য করিবার সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার কেদারনাথ স্ত্রীরোগ ও তাহার চিকিৎসা সম্বন্ধে কয়েকখানি গ্ৰন্থ ও বহুসংখ্যক প্ৰবন্ধ রচনা করিয়াছিলেন”। এক একখানি পুস্তক প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপ ও আমেরিকায় তাহার খ্যাতি বিস্তৃতিলাভ করিয়াছিল। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার ওয়াশিংটন শহর হইতে র্তাহাকে নিমন্ত্রণ করা হইয়াছিল* এবং তিনি তথায় যাইয়া অপূর্ব পাণ্ডিত্যের পরিচয় দিয়া সুসভ্য মার্কিন জাতিকেও চমৎকৃত করিয়াছিলেন। ভারতেও তঁহার সুনামের অস্ত ছিল না। চিকিৎসাব্যপদেশে ভারতের সকল স্থান হইতেই তাহার আহ্বান আসিত। অস্ত্ৰচিকিৎসায় তিনি বিশেষ খ্যাতিলাভ করিয়াছিলেন। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো, ফ্যাকলটি অব মেডিসিনের ভীন, মেডিকেল বোর্ড অব স্টাডির সভাপতি, স্টেট মেডিকেল ফ্যাকলটির সদস্য, কাউন্সিল অব মেডিকেল রেজিষ্ট্রেশনের সদস্য, ইন্ডিয়ান রেডক্রস সোসাইটির সদস্য, এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য প্রভৃতি সম্মানজনক পদ অলংকৃত করিয়া গিয়াছেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবৎসর জনসাধারণের মধ্য হইতে অসাধারণ মনীষাসম্পন্ন ব্যক্তিকে ‘কোর্টস মেডেল’ নামক এক পদক প্ৰদান করিয়া সম্মানিত করিয়া থাকেন। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে স্যার কেদারনাথকে ঐ মেডেল প্ৰদান করা হইয়াছিল। * কেদারনাথ শুধু অর্থ উপার্জন করিয়াই কর্তব্য শেষ করেন নাই। তিনি বহু ছাত্রকে অর্থসাহায্য করতেন। চিকিৎসাবিষয়ক নূতন নূতন পুস্তক ক্রয় করা তাহার একমাত্র বিলাসিত ছিল। র্তাহার গৃহে প্ৰায় দুই লক্ষ টাকা মূল্যের পুস্তক সংগৃহীত ছিল; মৃত্যুকালে তিনি উক্ত পুস্তক সমুদয় কারমাইকেল মেডিকেল কলেজে দান করিয়া গিয়াছেন। এতদব্যতীত নগদ প্রায় ৬০ হাজার টাকাও তিনি উক্ত কলেজে দান করিয়াছিলেন। সেজন্য কর্তৃপক্ষ তাঁহাদের নবনির্মিত প্ৰসূতি চিকিৎসাগরের “কেদারনাথ মেটানিটি হাসপাতাল।” নাম প্ৰদান করিয়াছেন। কেদারনাথের মৃত্যুকালে তঁহার বয়স প্রায় ৭০ বৎসর হইয়াছিল।” মৃত্যুর ১২ বৎসর পূর্বে তাহার সহধর্মিণী লোকান্তরিত হইয়াছিলেন।