“প্রতিদিন তাহাই করি।”
“তুমি লেখাপড়া কতদূর শিখিয়াছ?”
“কিছু শিখিয়াছি।”
“আমার ছেলেকে পড়াইতে পারিবে?”
সুরেন্দ্র খুসি হইয়া কহিল, “পারিব।”
ব্রজবাবু আবার হাসিলেন। তাঁহার মনে হইল, দুঃখে এবং দারিদ্র্যে তাহার মাথার ঠিক নাই! কেন না, কাহাকে শিক্ষা দিতে হইবে, এবং কি শিক্ষা দিতে হইবে, এ কথা না জানিয়াই অতটা আনন্দিত হওয়া তাঁহার নিকটে পাগলামি বলিয়া বোধ হইল। বলিলেন, “যদি সে বলে, আমি বি, এ ক্লাসে পড়ি, তখন তুমি কি করিয়া পড়াইবে?”
সুরেন্দ্র একটু গম্ভীর হইয়া ভাবিয়া বলিল, “তা এক রকম হইবে–”
ব্রজবাবু আর কোন কথা বলিলেন না। ভৃত্যকে ডাকিয়া বলিলেন, “বঙ্কু, এই বাবুটির থাকিবার জায়গা করিয়া দাও, এবং স্নানাহারের যোগাড় দেখ।” পরে সুরেন্দ্রের পানে চাহিয়া বলিলেন, “সন্ধ্যার পর আবার ডাকাইয়া পাঠাইব— তুমি আমার বাড়ীতেই থাক। যতদিন কোন চাকরির উপায় না হয়, ততদিন স্বচ্ছন্দে এখানে থাকিতে পারিবে।”
দ্বিপ্রহরে আহার করিতে গিয়া তিনি জ্যেষ্ঠা কন্যা মাধবীকে ডাকাইয়া কহিলেন, “মা, একজন দুঃখী লোককে বাড়ীতে স্থান দিয়াছি।”
“কে, বাবা?”